বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ট্রানজিট ভোগান্তি ছাড়াই ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ পাবেন ব্যবসায়ীরা। পরিবহন ব্যয় কমবে ৩০ শতাংশ। সাশ্রয় হবে সময়েরও।
মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পাল্টে দেবে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের চিত্র। দেশের প্রথম এই গভীর সমুদ্রবন্দরটি চালু হলে ট্রানজিট ভোগান্তি ছাড়াই ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ পাবেন ব্যবসায়ীরা। এতে পরিবহন ব্যয় কমবে ৩০ শতাংশ। সাশ্রয় হবে সময়েরও। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। এ বন্দরটি চালু হলে ১৬ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। ট্রানজিট ভোগান্তি ছাড়াই বিভিন্ন বন্দরে সরাসরি পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এতে পরিবহন ব্যয় ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে।’
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘এ বন্দর চালু হলে আমদানি-রপ্তানির জন্য সিঙ্গাপুর, কলম্বো কিংবা কেলাং বন্দর ব্যবহার করতে হবে না ব্যবসায়ীদের। মাতারবাড়ী থেকেই সরাসরি পণ্য পরিবহন করা যাবে। প্রতিবেশী দেশগুলোও এ সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এ অঞ্চলের ব্যবসায়িক হাবে পরিণত হবে মাতারবাড়ী।’
জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ, আমেরিকায় পণ্য পরিবহনে এখন তৃতীয় কোনো দেশের গভীর সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে হয়। বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কার কলম্বো কিংবা মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর ব্যবহার করে। এতে একদিকে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে অধিক সময় লাগে। কনটেইনার একাধিকবার হ্যান্ডলিংয়ের কারণে বাড়তি ব্যয় গুনতে হয়। এ সমুদ্রবন্দর চালু হলে ইউরোপ ও আমেরিকায় সরাসরি আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। এতে কনটেইনার পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে ৩০ শতাংশের মতো।
মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দরে থাকবে একটি ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি, ৪৬০ মিটার দীর্ঘ একটি কনটেইনার বার্থিং জেটি। ৩৫০ মিটার চওড়া ও ১৬ মিটার গভীরতার ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেল। উত্তর দিকে ২ হাজার ১৫০ মিটার ও দক্ষিণে ৬৭০ মিটার লম্বা ঢেউনিরোধক বাঁধ। তিনটি টাগবোট, একটি পাইলট বোট, একটি সার্ভে বোট, কার্গো হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট টিওএস ও সিকিউরিটি সিস্টেম থাকবে। জাতীয় মহাসড়কে যুক্ত হওয়ার জন্য নির্মাণ হবে প্রায় ২৮ কিলোমিটার সড়ক।
এরই মধ্যে ঢেউনিরোধক বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়েছে। অ্যাপ্রোচ চ্যানেল নির্মাণও শেষের দিকে। সিভিল ওয়ার্কস ফর পোর্ট কনস্ট্রাকশন, কার্গো হ্যান্ডলিং ইকুইপমেন্ট টিওএস ও সিকিউরিটি সিস্টেম টাগবোট, সার্ভে বোট এবং পাইলট বোট কেনার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ দরপত্র মূল্যায়নের পর মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরুর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।