নিজস্ব প্রতিনিধি : উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হোসেন গত ১১ মার্চ তার প্রতিষ্ঠিত পাবনাস্থ সিংগা মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক কর্মকান্ড তুলে ধরে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। দেশবাসীকে তার মানবকল্যাণ মুখি এই প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কমকান্ড জানান দেয়া, দানকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তার সিংগা মানবকল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক কর্মকান্ড এবং দেশিবিদেশি সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনা করেন সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, ১৯৬৭ সালে হিসাব বিজ্ঞান শাস্ত্রে পড়ালেখা শেষ করে যুক্ত হন অধ্যাপনায়। তার জীবনে ৩ টি প্রতিষ্ঠানে টানা ৩৫ বছর ১৫ দিন অধ্যাপনা করে ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরগ্রহণ করেন। তিনি স্বদেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মানবসেবায় ব্রত হয়ে ১৯৯৪ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন পাবনা শহরতলীয় সিংগা এলাকায় ‘মানব কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
৩ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানে ১৫০ জন আবাসিক ছাত্র রয়েছে। যাদের বিনাখরচে থাকা, খাওয়া, পড়ালেখা ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়। ৫০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ছাত্র ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ালেখা করে। ১২ জন রয়েছে মুখ ও বধির। কৃষি বিপ্লব ও কৃষি পণ্য বাড়াতে এই প্রতিষ্ঠানে চলছে দীর্ঘ ৬ মাস ধরে একটি গবেষণা। রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্ণার, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরসহ বিলুপ্ত নানা সামগ্রী সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি যাদুঘর। ইতোমধ্যে এই ট্রাস্টের ৩ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকুরি প্রাপ্তি হয়েছে।
অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, আমি পেনশনভোগী একজন অবসরপ্রাপ্ত মানুষ। জীবন সায়াহ্নে এসে দাঁড়িয়েছি। মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় একটি বৃদ্ধাশ্রম ও ফ্রি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করতে চাই। ১৫০ জন এতিম, অনাথ, দৃষ্টি, বাক প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী ও ১৬ জন শিক্ষকের খাওয়া এবং মাসিক সম্মানি খরচ হয় ৩ লাখ টাকা। দানবীর মানুষের দান, আর্থিক সহায়তা আর সবশ্রেণিপেশার মানুষের ভালোবাসায় কোনমতো চলে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উচ্চপদস্থ দেশি বিদেশী কর্মকর্তাসহ গুণিজনেরা আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড পরিদর্শণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
অধ্যাপক আবুল হোসেনের দাবী, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, দেশি বিদেশী দাতা সংস্থার সহায়তাই পারে আমার মানব সেবার মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত প্রার্থনা করছি। আমার সার্বিক কর্মকান্ড প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে চাই। আমি সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে সহজ সরল ভাবে আমার প্রতিষ্ঠানটি এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তালিকাভূক্তি চাই।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব কামরুন্নাহার খানম, চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল বাকী, প্রকৌশলী নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল জব্বার ও ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সহকারী অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন শহিদুল ইসলাম।