বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সামনে রমজান মাস। এ সময় আমাদের কিছু ব্যবসায়ী জিনিসের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। কারণ রমজান মাস কৃচ্ছ্রসাধনের সময় এবং মানুষ যাতে ভালোভাবে তাদের ধর্মকর্ম এবং রোজা যথাযথভাবে পালন করতে পারে সেদিকেই সবার দৃষ্টি দেওয়া উচিত। সে সময় এসব মুনাফালোভীর জিনিসের দাম বাড়ানো আর মানুষকে বিপদে ফেলার কোনো মানে হয় না।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজাল দেওয়া, মজুতদারি বা কালোবাজারি এবং নিত্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি এটা যেন কেউ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে আমি সতর্ক থাকার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ইমামরা যখন মসজিদে জুমার নামাজের খুতবা দেন তখন কালোবাজারি বা মজুতদারি বা খাদ্যে ভেজাল দেওয়া আর অযথা মানুষকে কষ্ট দেওয়া যে গর্হিত কাজ সে ব্যাপারে মানুষকে আপনাদের আরও বলা উচিত। খুতবাতেও এটা বলতে পারেন বা মানুষকে সচেতন করতে পারেন। সেভাবেই কাজ করতে আমি মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খাদেমদের অনুরোধ করব। তাহলে মানুষের মধ্যে অতিরিক্ত মুনাফা নেওয়ার প্রবণতা নিশ্চয়ই কমবে।
নিুআয়ের মানুষের ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকার পারিবারিক কার্ডের ব্যবস্থা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অধিক দামে চাল কিনে ৩০ টাকা মূল্যে বিভিন্ন পরিবারকে দিচ্ছি। রমজানকে সামনে রেখে আরও ১ কোটি মানুষকে ১৫ টাকা কেজি দরে আমরা চাল সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি এবং একেবারে কর্মক্ষমতাহীনদের বিনাপয়সায় ৩০ কেজি করে চালও দিয়ে যাচ্ছি। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার ন্যায্যমূল্যে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ সরকার যাতে আরও ভালোভাবে এগিয়ে নিতে পারে সেজন্য সবার কাছে দোয়া চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না। সরকার গৃহহীন-ভূমিহীনকে বিনামূল্যে ঘরবাড়ি এবং জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। কৃষিতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। শ্রমিকদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন এবং ১শটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। বিদেশগামীদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে বিনা জামানতে ব্যাংক ঋণেরও ব্যবস্থা করেছে। কেউ দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশে গিয়ে শেষে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরবে-এটা সরকার চায় না বলেই সব ধরনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছর ইসলামের খেদমতে বহু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তৃতীয় ধাপে এসব মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী তিনটি ধাপে সারা দেশে ৯,৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৫৬৪টি মসজিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন। অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুন মাসে শেষ হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
এতে ভার্চুয়ালি বরিশালের আগৈলঝাড়া, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-ওলামা ও সাধারণ জনগণ সংযুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।