বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : জনবান্ধব ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়তে ডিজিটাইজেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে জাতীয় ভূমি সম্মেলনে। দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের গতকাল শুক্রবার ছিল শেষ দিন। তিন দিনের এই সম্মেলনে ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং বিদ্যমান ভূমি সংক্রান্ত সমস্যা ও সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনা করা হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এখন থেকে প্রতিবছর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের মতো জাতীয় ভূমি সম্মেলন করা হবে। সম্মেলনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সমস্যা সম্পর্কে জানা হবে। এরপর ওই সমস্যা সমাধানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
এবারের সম্মেলনে জলমহাল, বালুমহাল, চিংড়িমহাল, লবণমহাল, হাট-বাজার, পাথরমহাল, কাঠমহাল, বাঁশমহাল, ফেরিঘাট, খাসজমি, জনবান্ধব ভূমিসেবা, অধিগ্রহণ ব্যবস্থাপনা, সরকারি মামলা ও সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা, বাংলাদেশ ডিজিটাল জরিপ, স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এডিসি, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর ও এসি ল্যান্ডরা।
সম্মেলনে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, এবারের সম্মেলনে চারটি প্যানেল ডিসকাশন করা হয়। এ সময় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উন্মুক্ত আলোচনায় বিদ্যমান ভূমি ব্যবস্থাপনার সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল পদ্ধতি : সম্মেলনে মৌজা দাগের মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব ভার্সন, দ্বিতীয় প্রজন্মের খতিয়ানের ধারাবাহিক চেইন বা ট্রি সিস্টেম, ই-রেজিস্ট্রেশন, ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমের আন্তসংযোগ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমি-পিডিয়া ও নাগরিক ভূমিসেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্তমানে অনলাইনে জলমহাল ইজারা দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই বালুমহাল, চিংড়িমহাল, লবণমহাল, হাট-বাজার, পাথরমহাল, কাঠমহাল, বাঁশমহাল ও ফেরিঘাট অনলাইনে ইজারা দেওয়া হবে। এতে যখন কোনো লিজগ্রহীতা বা লিজদাতার সায়রাত মহালের হালনাগাদ তথ্যের প্রয়োজন হবে, তখন তিনি উপজেলা ওয়েব পোর্টাল থেকে রেজিস্টার-৬ অপশনে গিয়ে ক্লিক করলে সায়রাত মহালের তালিকা আসবে। ওই তালিকা থেকে সংশ্লিষ্ট মহালের নামে ওপর ক্লিক করলে হালনাগাদ তথ্য নির্ধারিত ফর্মে দেখাবে। এতে বন্ধ হবে ভূমি ব্যবস্থাপনার অনিয়ম-দুর্নীতি।
বর্তমানে চালু আছে, ই- মিউটেশন, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর আদায় সিস্টেম, ডিজিটাল রেকর্ডরুম, ডাকযোগে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রাপ্তি, ডিজিটাল সার্ভেয়িং এবং ম্যাপিং, অনলাইন জলমহাল ইজারা, ল্যান্ড জোনিং, অনলাইন শুনানি সিস্টেম, হটলাইন সেবা (১৬১২২) ইত্যাদি।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল বারিক বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাঁদের প্রতিবন্ধকতার কথা বলেছেন। এখন সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, সব সায়রাত মহালের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ধীরে ধীরে ডিজিটাল করা হবে। প্রায় ৮০ শতাংশ সরকারি ভূ-সম্পদ, খাসজমি ও সায়রাত মহালের তফসিল ভূমি তথ্য ব্যাংকে আপলোড করা হয়েছে। ভূমি তথ্য ব্যাংক চালু হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট প্রকৃত পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীদের কাছে স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে সরকারি সম্পদ ইজারা দেওয়া সম্ভব হবে।