বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ। গতকাল সংসদ ভবনে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর ভাষণের ওপর দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনকালে তিনি একথা বলেন। জাতীয় সংসদের ৫০তম বার্ষিকী (সুবর্ণজয়ন্তী) উপলক্ষে গতকাল থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশন শুরুর আগে তিনি সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে যোগ দেন। দুটি বইয়ের একটি হলো সংসদে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সংকলন ও অন্যটি হলো ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে ডাকা সংসদের বিশেষ অধিবেশনে প্রদত্ত আইন প্রণেতাদের ভাষণের সংকলন। শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) তাঁর বক্তৃতায় বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, তার দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সুতরাং, এটি আমাদের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য (এমপি), জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশ ও এর জনগণকে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ৫০ বছরে আমাদের প্রজন্ম বা পরবর্তী প্রজন্ম, প্রজন্মের পর প্রজন্ম বক্তৃতা জানবে এবং এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে বোঝার, জনগণের অবস্থা, তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সবকিছু জানার সুযোগ পাবে।
প্রধানমন্ত্রী সংসদের বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া সংসদ সদস্যদের বক্তৃতার সংকলনের প্রশংসা করে বলেন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এ ব্যাপারে তিনি স্পিকার, সংসদ সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সংবিধান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধান বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সংবিধান। কারণ এতে সর্বস্তরের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের জাতির পিতা বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গণপরিষদ গঠন করেন। সরকারপ্রধান বলেন, মাত্র নয় মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, যা ইতিহাসের একটি বিরল ঘটনা। এটিকে সম্ভবত গোটা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এর মাধ্যমে গরিব, অভাবী, বঞ্চিত ও শোষিত মানুষের মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত করা হয়। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে সুবিধাবঞ্চিতসহ সমাজের সব স্তরের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সে নির্বাচনে সাতটি ছাড়া বাকি সব আসনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ কার্য-উপদেষ্টা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনের কার্যাদি নিষ্পন্নের জন্য সময় বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়। গতকাল সকাল ১১টায় অধিবেশন শুরু হয়, ৯ এপ্রিল পর্যন্ত এ অধিবেশন চলবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। আজ বিকাল ৩টায় এবং ৮ ও ৯ এপ্রিল সকাল ১০টায় অধিবেশন শুরু হবে। উল্লেখ্য, এ অধিবেশনে মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আজ বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে স্মারক বক্তৃতা করবেন। এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য ২০টি ও অন্যান্য মন্ত্রীর জন্য ৪৪৯টি প্রশ্নসহ মোট ৪৬৯টি প্রশ্ন পাওয়া গেছে। বিধি-৭১ এ মনোযোগ আকর্ষণের নোটিস পাওয়া গেছে ৩৫টি। অধিবেশনে উত্থাপনের জন্য আটটি সরকারি বিলের নোটিস পাওয়া গেছে। গত অধিবেশনে অনিষ্পন্ন ৯টি বিলসহ ১৭টি বিলের মধ্যে কমিটিতে পরীক্ষাধীন সাতটি, পাসের অপেক্ষায় একটি ও উত্থাপনের অপেক্ষায় ৯টি বিল রয়েছে। বেসরকারি সদস্যদের বিলের কোনো নোটিস পাওয়া যায়নি। কার্য-উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওবায়দুল কাদের, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।