বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশেষে ২৩১ জনবল নিয়ে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ ফোর্সের অনুমোদন দিয়েছে সচিব কমিটি। গতকাল রবিবার বিশেষায়িত ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। একই সঙ্গে প্রতিটি স্টেশনে একটি করে ডিজি-বক্স রাখতে এটুআইয়ের সঙ্গে চুক্তিও করেছে ডিএমটিসিএল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক।
জানা গেছে, পূর্বাচল হবে এমআরটি পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স। ইউনিট প্রধান থাকবেন একজন উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি)। এমআরটি পুলিশের প্রধান ছাড়াও অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পরিদর্শক (নিরস্ত্র), পরিদর্শক (সশস্ত্র), এসআই, এএসআই, নায়েক, কনস্টেবল, হিসাবরক্ষক, উপসহকারী হিসাবরক্ষক, কম্পিউটার অপারেটরসহ মোট ২৩১ জনের একটি সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন করা হয়েছে। বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত এই ইউনিটের সদস্যদের জন্য থাকবে আলাদা ইউনিফর্ম। ইউনিটের জন্য যানবাহনেরও প্রস্তাব রয়েছে। এখন প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পাওয়ার পর এই ইউনিট চালু হবে। এছাড়া এমআরটি লাইন-১ এর পিতলগঞ্জ ডিপো এলাকায় এই ফোর্সের প্রধান কার্যালয় নির্মাণের জন্য ভূমি চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। ঢাকা মহানগর ও আশপাশের এলাকায় মোট ১২৮ কিলোমিটার এলাকায় অত্যাধুনিক গণপরিবহন হিসেবে পাঁচটি মেট্রোরেল পর্যায়ক্রমে চালু হবে। ডিএমটিসিএলের এই নেটওয়ার্কে মোট ১০৪টি স্টেশন তৈরি হবে। এগুলোর ৫১টি হবে উড়াল ও ৫৩টি পাতাল স্টেশন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে আজ চালু হচ্ছে উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে এটিএম বুথ, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও দোকান থাকবে। পুরোদমে চালু হলে প্রতিবার যাতায়াত করবেন কয়েক হাজার যাত্রী। এ জন্য প্রতিটি স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে, ডিজি-বক্স সম্পর্কে ডিএমটিসিএলের ম্যানেজার (সিভিল এন্ড পি-ওয়ে) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, স্টেশনে ডিজি-বক্স স্থাপন এটুআইয়ের একটা প্রোগ্রাম। এটি হচ্ছে এক ধরনের বক্স, যা ডিজিটালি পারফর্ম করে। এর ভেতর ডেলিভারির পণ্যগুলো থাকবে। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় একটি কোডের মাধ্যমে বক্সটি ওপেন করে যাত্রীরা যাতায়াতের সময় তার পণ্যটি নিতে পারবে। আমরা এটির জন্য স্টেশনের কনকর্স লেভেলের বাইরে জায়গা দিয়েছি। আমরা এটুআইয়ের সঙ্গে আজকে চুক্তি করলাম ৯টা স্টেশনের জন্যই। কাল-পরশু থেকেই তারা কাজ শুরু করে দেবে। ইতোমধ্যে তারা ৬টি জায়গায় শনাক্ত করেছে, যেখানে কোনো রকমের পরিবর্তন-পরিবর্ধনের প্রয়োজন নেই। বাকিগুলো তারা স্টেশনের দেয়া জায়গার মাপ অনুযায়ী বানাবে।
প্রসঙ্গত, পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) শুরুর দিকে রেলওয়ের পুলিশের অধীনে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে পরিকল্পনা হয়। তবে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি সভায়
প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বতন্ত্র বিশেষায়িত এমআরটি পুলিশ ফোর্স দ্রুত গঠনের অনুশাসন দেন। এমআরটি পুলিশ ইউনিট গঠনে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে পুলিশ সদর দপ্তর ৮০৯ জন সদস্যের জনবলের একটি কাঠামো গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের অনুমোদনের পর গত বছরের এপ্রিলে প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে পদ সৃষ্টির প্রস্তাবটি পাঠানো হলে বিষয়টি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক পুনরায় উপস্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নির্দেশনার পর জননিরাপত্তা বিভাগের সমন্বয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মতামতের পর পদ সৃষ্টির প্রস্তাবটি মেট্রোরেল চালুর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর ফের সচিব কমিটির সভায় পাঠানো হয়। কিন্তু প্রস্তাবটি আরো পর্যালোচনার জন্য ফেরত পাঠানো হয়।