বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চলতি বোরো মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ২০ লাখ টনের মতো চাল উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ডক্টর মো. আব্দুর রাজ্জাক। হাওড়ে এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
রোববার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোরো ধান নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ লাখ ৭৬ হেক্টর জমি। আর আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ কোটি ১৫ লাখ টন চাল। মাঠে ধানের অবস্থা ভালো, হাওড়ের ধানও ভালোভাবে কাটা গেছে। আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ লাখ টন বেশি চাল উৎপাদন হতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, মেশিনে ধান কাটায় হাওড়ে ধান দ্রম্নত কাটা সম্ভব হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওড়ের ৭টি জেলায় ৩ হাজার ৮০০ কম্বাইন হারভেস্টার ও ৬৭০টি রিপার দিয়ে ধান কাটা চলছে। পাকা ধান দ্রম্নত কাটার জন্য আমরা ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে হাওরে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে যাচ্ছি। শ্রমিকের মজুরি এখন বেশি ও শ্রমিক সংকট রয়েছে।
ধানের দাম প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। ধান কাটার পরই খেত থেকে ভেজা ধান ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। গত ১৪ বছরে কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে আমরা হাওড়ের কৃষককে ধান কাটার যন্ত্র দিচ্ছি অর্থাৎ একটা যন্ত্রের দাম ২৮ লাখ টাকা হলে ২০ লাখ টাকা সরকার আর কৃষক মাত্র ৮ লাখ টাকা দিচ্ছে। এটি একটি বিরাট উন্নয়ন।
মন্ত্রী জানান, হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওড়ে এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে। আর এই ৭টি জেলায় মোট বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪০ লাখ টন চাল। এখন পর্যন্ত হাওরে ৯০ ভাগ বোরো ধান কর্তনের মধ্যে সিলেটে ৯১ ভাগ, মৌলভীবাজারে ৯৭ ভাগ, হবিগঞ্জে ৮০ ভাগ, সুনামগঞ্জে ৯৬ ভাগ, কিশোরগঞ্জে ৮০ ভাগ, নেত্রকোনায় ৯৬ ভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯২ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।
ডক্টর রাজ্জাক বলেন, বস্নাস্ট আক্রান্ত ব্রি-২৮ ধান মাঠ থেকে দ্রম্নত তুলে নেওয়া হবে। কৃষক যাতে এ ধান আর আবাদ না করেন এজন? তাদের নিরুৎসাহিত করছি। নতুন জাতগুলোর মধ্যে ব্রি-২৮ বাংলাদেশে জনপ্রিয়। চালটাও চিকন, উৎপাদনও ভালো, ফসল ওঠে আগে। কিন্তু সব জাতই দীর্ঘদিন চাষ করলে গুণাগুণ কমে যায়, বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড় আক্রমণের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ব্রি-২৮ এত ভালো ধান, এটা বস্নাস্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। দেশের অনেক জায়গায়ই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা-৮৯ ও ৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০, বিনা ধান ২৫ ভালো ধান হচ্ছে বলেও জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ জাতগুলো দ্রম্নত সম্প্রসারিত হওয়া দরকার। কৃষকের কাছে যাওয়া দরকার। বিনা ধান-২৫ এত চিকন চাল, এবার এত উৎপাদন হয়েছে, অস্বাভাবিক লাগছে। এবার এ ধানটা বিপস্নব ঘটাবে। বেশিরভাগ জেলায় এটা দেওয়া হয়েছে।