বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বাধাগুলো দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এলসি খোলার সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখা (মার্জিন) বিষয়ক বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ব্যাংক-ক্লায়েন্ট সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিন নির্ধারণ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা উত্থাপিত প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তিনি আরো জানান, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং মানুষকে সহায়তা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য ব্যবসায়ী নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে নিয়মিত সভা আয়োজন করা। এসব সভায় নিত্যপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, চাহিদা
নিরূপণ, স্থানীয় উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, আমদানির পরিমাণ ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে।
সরকারপ্রধান জানান, দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে প্রয়োজন অনুযায়ী কোনো কোনো পণ্যের মূল্য (যেমন-ভোজ্য তেল ও চিনি) সমন্বয় করা হয়ে থাকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত বাজার মনিটরিং টিম ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজার নিয়মিত পরিদর্শন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য, মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং কোনো ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা বা পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হলে তাত্ক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
একই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকাসহ সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত বাজার মনিটরিং অভিযান পরিচালনা করে। সারা দেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলায় গঠিত জেলা বা উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটি মাসিক সভা করে থাকে। এসব টাস্কফোর্স কমিটি জেলা ও উপজেলার বাজারগুলোয় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের সহায়তায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের প্রথম পর্ব পবিত্র রমজান উপলক্ষে গত ৯ মার্চ থেকে শুরু হয়েছিল।
দ্বিতীয় পর্ব ৩ এপ্রিল শুরু হয়ে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলমান ছিল। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যপ্রাপ্তি সহজলভ্য করতে ওএমএস কার্যক্রমের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে সুলভ মূল্যে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে পবিত্র রমজান মাসে চাল ও আটার বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ স্বল্পমূল্যে চাল ও আটা কিনতে পারছে। এসব কার্যক্রম নেওয়ার ফলে নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে এবং দরিদ্র মানুষ এতে উপকৃত হচ্ছে।