বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস কর্মসূচির আওতায় আগামী রোববার ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচির আওতায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ২৫ লাখ শিশুকে নীল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে খাওয়ানো হবে লাল রঙের ক্যাপুসল। মোট ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকায় এ কর্মসূচি চারদিন চলবে। ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়াতে শিশুদের ভরা পেটে কেন্দ্রে আনতে হবে। ছয় মাসের কম বয়সী এবং পাঁচ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুদের অন্ধত্ব প্রতিরোধসহ বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচানো সম্ভব। ভিটামিন এ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। সব ধরনের শিশু মৃত্যুহার ২৪ ভাগ কমায়, হাম, ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়াজনিত মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে। ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি থেকে একটি শিশুও যেন বাদ না পড়ে তা সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে।
সারাদেশের ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রে ২ লাখ ৪০ হাজার স্বাস্থ্যসেবী এবং ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী ভিটামিন ‘এ’ প্লাস কর্মসূচিতে শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজ করবেন বলে জানান মন্ত্রী।
এদিকে, ১৮ জুন জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬ লাখ ২ হাজার ৮০৬ জন শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে ডিএনসিসি নগরভবনে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান।
তিনি বলেন, জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল বিনামূল্যে খাওয়ানো হবে। এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণ মতো ঘরে তৈরি সুষম খাবার খাওয়ানোর বার্তা প্রচার করা হবে।
তিনি বলেন, শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও দৃষ্টি শক্তির জন্য ভিটামিন-এ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক অনুপুষ্টি। ভিটামিন-এ চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টি শক্তি ও শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় রাখে এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে থাকে। ভিটামিন-এ এর অভাবে রাতকানা সহ চোখের অন্যান্য রোগ, শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, রক্ত শূন্যতা এমনকি শিশুর মৃত্যুও হতে পারে।
তিনি জানান, এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের আওতাধীন ৫৪টি ওয়ার্ডে আগামী ১৮ জুন জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে এ কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সের শিশুর ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৯ জন এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সের শিশুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৭ জন।
প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে ১ হাজার ৯০৫টি কেন্দ্রে, পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োজিত থাকবে ৩ হাজার ৮১০ জন। এছাড়া ২৮৬ জন সুপারভাইজার এই কার্যক্রম তদারকি করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।