সজীব ওয়াজেদ জয় ভিশনারি এক লিডার। তিনি ভবিষ্যতের ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশকে ২০০৯ সালে দেখতে পেয়েছিলেন বলেই আজ দেশে ১৩ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। ১৮ কোটি ৬০ লাখ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছেন। শিক্ষাখাতে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ বেড়েছে। বিশেষত করোনা মহামারিতে সব প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল ছিলো।
পাঠসূচিতে যেমন শিশুরা আইসিটি অধ্যয়ন করছে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হয়েছে বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার। এমনকি দেশের বিপিও খাতে বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি করা হচ্ছে; ৫০ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সাড়ে ছয় লাখ মানুষ এই মুহূর্তে আইসিটি সেক্টরে ফ্রিল্যান্সিং করছেন অসংখ্য মানুষ এই সেক্টরে চাকরি করছেন।
২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ মানুষের কাজ করার সুযোগ হবে। এই খাতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। আর এসবই সম্ভব হয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে গেছে তেমনি তার পুত্রের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে এদেশ প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সজীব ওয়াজেদ জয় সবসময়ই বলেছেন, উন্নয়নের অসমাপ্ত বিপ্লব শেষ করতে হলে আওয়ামী লীগকে সুযোগ দিতে হবে। তাঁর মতে, নতুন ও আধুনিক একটি বাংলাদেশের জন্য উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের জন্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। মহামারির সময় প্রযুক্তি আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল করে রেখেছিলো।
জন্ম ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায়। বাংলাদেশের সমান বয়সী সজীব ওয়াজেদ জয়। ভবিষ্যতে দেশের যেকোনো দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। ভারত থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি এবং যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি ২৫০ তরুণ বিশ্বনেতার মধ্যে একজন হিসেবে সম্মানিত হন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি সচেতন। ২০০৮ সালের জুন মাসে শেখ হাসিনাকে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারাগার থেকে মুক্ত করার
ক্ষেত্রে তাঁর অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বেই শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দিকে দেশ এগিয়ে গেছে। তার সেই চিন্তায় ডিজিটাল বাংলাদেশের বিকশিত রূপটি এখন আমরা দৈনন্দিন জীবনে উপভোগ করছি। প্রাণঘাতী ব্যাধির চিকিৎসা থেকে শুরু করে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন প্রযুক্তি।
২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে বাংলােেদশের। দেশে আইটি ডিভাইস
উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশে তৈরি ডিজিটাল ডিভাইসের রপ্তানি আয় বর্তমানের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। একই সময়ে আইসিটি পণ্য ও আইটি-এনাবল সার্ভিসের অভ্যন্তরীণ বাজারও ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বাজার ধরতে ডিজিটাল ডিভাইস তথা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মতো আইটি পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প স্থাপনের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে স্থানীয় পণ্যের ব্রান্ডিংয়ে মেড ইন বাংলাদেশ রোডম্যাপ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি)।
এ রোডম্যাপের সঠিক বাস্তবায়ন হলে দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে। প্রায় ২০০ কোটি ডলারের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হবে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন। সম্প্রতি আইসিটি বিভাগের প্রস্তুত করা হয়েছে। আইসিটি বিভাগের আশা, মেড ইন বাংলাদেশ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আইসিটি এবং আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) পণ্য উৎপাদনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে। এটি সরকারের সবার জন্য ডিজিটাল এক্সেস এজেন্ডা বাস্তবায়নেরও সহায়ক হবে।
দেশের উদীয়মান মধ্যবিত্ত ও সচ্ছল শ্রেণির ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ডিভাইস ও কনজ্যুমার গ্যাজেটের চাহিদা আন্তর্জাতিক হাই-টেক শিল্পে বাংলাদেশের প্রবেশে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। রোডম্যাপে সরকারি কেনাকাটায় দেশে উৎপাদিত আইসিটি পণ্যের ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কেনাটাকায় জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি সহজ করতে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ইংল্যান্ড বা অন্য কোন দেশে হাব স্থাপনেরও প্রচেষ্টা চলছে। নতুন রোডম্যাপটিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, পণ্যের মান উন্নয়ন, গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, বৈশ্বিক চাহিদা নিরূপণ, বিশ্যব্যাপী বাংলাদেশি পণ্যের ইমেজ বৃদ্ধি, মেধাস্বত্ব রক্ষা, গবেষণা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারের আইসিটি বিভাগ ছাড়াও বিশাল এ কর্মযজ্ঞে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগের পাশাপাশি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা), রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বিএসটিআই, বিটাক, দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন একযোগে কাজ করবে।
রোডম্যাপ সফল করতে, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সংগঠনেরও থাকবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আমাদের এই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নে নিরলস কাজ করছেন। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ তরুণ। সজীব ওয়াজেদ এই তারুণ্যকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চান। তিনি মনে করেন, দেশের মোট জনসখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তরুণকে প্রশিক্ষিত করে আমরা যদি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে খুবই দ্রুত তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ববাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করতে পারব।
এই তরুণ জনগোষ্ঠীই আমাদের সম্পদ। সরকার আইসিটি খাতে এই জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে তুলতে তাদের প্রশিক্ষণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তারুণ্যকে প্রাধ্যান্য দিয়ে এবং তাদের অংশগ্রহণে প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেও চলছে কর্মযজ্ঞ। প্রয়োজনীয় কর্মকা- সাধারণ মানুষের নাগালে পৌঁছে দিতে দেশের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে ব্রডব্যান্ড সংযোগ এবং ৮৫০০ ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার চালু রয়েছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
পরীক্ষার ফরম পূরণ, চাকরির আবেদন, করোনা পরীক্ষার নিবন্ধন, কেনাকাটা থেকে শুরু করে বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিও নেওয়া যাচ্ছে ঘরে বসেই। ব্যাংকে না গিয়ে মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং এবং আই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজেই সেবা নিতে পারছে। করোনাকালে ঘরে বসে অনলাইনে অফিস করছে, ক্লাস করছে। এসবই সম্ভব হয়ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে। এখন লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ।
১৯৮১ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতিতে অভিষেক। তারই ধারাবাহিকতায় সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণ কর্মীদের উজ্জীবিত করে নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মা শেখ হাসিনার মতো আন্তরিকভাবে সাধারণ মানুষকে কাছে টানার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। স্বাভাবিকভাবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয়। তৃতীয় প্রজন্মের এই নেতৃত্বের প্রতি কেন্দ্রীভূত দেশের বেশির ভাগ মানুষের দৃষ্টি। বঙ্গবন্ধুর মতো পরিশ্রমী তিনি। তারুণ্যের প্রাণময়তায় আওয়ামী লীগকে গড়ে তুলতে চান নতুন দিনের একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে।
যদিও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ এখনো রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় দল। বাংলাদেশকে আজকের তারুণ্যই আগামী দিনের নেতৃত্বের পথটি দেখিয়ে দিতে পারে। যেমন দেখিয়ে দিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। রাজনীতির উত্তরাধিকার সূত্রেই এখন রাজনীতির মঞ্চে তিনি। সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্রষ্টা । বাংলাদেশে তরুণ নেতৃত্বের বিকাশ, তাদের স্বপ্ন দেখানো, তাদের কর্মসংস্থান, তারুণ্যে উদ্যোক্তা নির্মাণে, প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা, শিল্পায়ন- গবেষণা ইত্যাদি বিষয়ে তার অসাধারণ অবদান রয়েছে। উন্নয়নশীল বিশ্বে তিনিই একমাত্র মেধাবী নেতৃত্ব যিনি তার দেশকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবং সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় আধুনিক বাংলাদেশের অগ্রগতির রূপকার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। এদেশের অফিস-আদালত থেকে শুরু করে টেন্ডার কিংবা ব্যাংকের লেনদেনের যে অভূতপূর্ব পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে সেই ডিজিটালাইজেশনের নেপথ্যে তাঁর অবদান রয়েছে।
কৃষিভিত্তিক সমাজ ক্রমান্বয়ে প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে পরিণত হয়েছে। কেবল সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনায় কাজ করে প্রযুক্তির প্রসার ঘটেছে এদেশে। ফলে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য, তার পুরোভাগে তিনি আছেন। শেখ হাসিনা যেমন নির্লোভ, মানুষকে ভালোবাসেন নিজের অন্তর থেকে, জয়ও তেমনিভাবে এগিয়ে চলেছেন। বিরুদ্ধ মানুষের মন জয় করতে হয়েছে তাকে। প্রকৃতপক্ষে সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের উন্নয়নে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি কেবল প্রযুক্তি নিয়ে ভাবেন না, তিনি মানুষকে মূল্য দেন। মানুষের দুঃখে সমব্যথী হন। আসলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং পিতা-মাতা বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ ও শেখ হাসিনার মতো আন্তরিক হৃদ্যতায় সাধারণ মানুষকে কাছে টানার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তার।
দেশে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা যেমন সক্রিয় উদ্যোগ নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তেমনি জয়ের পরামর্শে প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে ৯৪টি যন্ত্রাংশের ওপর থেকে উচ্চ আমদানি শুল্ক উঠিয়ে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। জয় জানেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০২৬ সালের পর মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো আমরা।
জয়ের মতো নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব আমাদের রাজনীতিতে যেমন ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা ঘটিয়েছে, তেমনি উন্নয়নে সার্বিক অগ্রগতি সম্পন্ন করেছে। রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের পদচারণা আমাদের এগিয়ে চলার পথে বাড়তি প্রাপ্তি। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, প্রতিবছর ভোটার তালিকায় তরুণ ভোটার আসে প্রায় ২৩ লাখ। ৯ কোটি ২১ লাখ ভোটারের মধ্যে ৪ কোটি ভোটারের বয়স ৪০ বছরের নিচে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ নামের যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছিলেন এক যুগ আগে, তারই বাস্তব চিত্র দেখেছি আমরা ২০২০ সাল থেকেই। গত দুই বছরে মাসে কোভিড চলাকালীন আমরা বাসায় বসেই ইন্টারনেটে অফিসের যাবতীয় কাজ করেছি, ভিডিও কনফারেন্সে মিটিং করেছি; ফিনটেক দিয়ে ব্যাংকিং সেরেছি, অনলাইনে বাজার করেছি, টেলিমেডিসিনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছি। আবার স্ট্রিমিং ও ওটিটির মাধ্যমে নাটক-সিনেমাও দেখেছি। আমরা এখন খুব ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করেছি সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল। অনলাইনে যখন আদালতের কার্যক্রম চলছে, ছাত্রছাত্রীরা যখন ই-লার্নিং ব্যবহার করে লেখাপড়া করছে, চাষি ও খামারিরা যখন মধ্যস্বত্বভোগী পরিহার করে তাদের ফলানো ফসল সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করছেন; দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণরা যখন ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন; তখন জাতি উপলব্ধি করতে পেরেছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দূরদর্শিতা।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয় তার বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন নানাভাবে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সরাসরি তত্ত্বাবধানে তিনি এটুআই গঠন করেছিলেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার (বিএনডিএ) ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করেছেন। এই ফ্রেমওয়ার্ক বা কর্ম-কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে সরকারি সব পরিষেবাকে অনলাইনে নিয়ে আসার রেখাচিত্র বানিয়েছেন তিনি। তাঁর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশে সরকারি সব সেবা পৌঁছে যাবে নাগরিকের দোরগোড়ায়। পরিষেবা হাতের মুঠোয় থাকায় একজন নাগরিককে যেতে হবে না সরকারের কাছে। যিনি
যেখানে আছেন, সেখানে বসেই সরকারি পরিষেবা নিতে পারবেন।
২০১৮ সালে যখন বাংলাদেশের নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়, তখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার কথা অনেকেই অনুধাবন করতে পারেননি। এই স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এখন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যে শুধু কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রাই সাশ্রয় করছে তা নয়, বিদেশেও এই স্যাটেলাইটের ফ্রিকোয়েন্সি বিক্রি করা যাচ্ছে। নিজস্ব স্যাটেলাইট থাকায় বাংলাদেশের মর্যাদাও বৃদ্ধি পেয়েছে বিশ্ববাসীর কাছে। ২০৪১
সালের মধ্যে বাংলাদেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ সজীব ওয়াজেদ জয় চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে বাংলাদেশকে শামিল করে এর পূর্ণ সুবিধা ভোগের জন্য ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু করার ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে আমাদের উৎপাদনশীলতা যেমন বাড়ছে, তেমনই সক্ষমতা ও কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের জনসম্পদের
দক্ষতা বাড়ছে। সেই লক্ষ্যে তিনি শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস এবং সব জেলায় শেখ কামাল ট্রেনিং
ইনস্টিটিউট ও ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরির করা হয়েছে। বেকার সমস্যা দূরীকরণে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিংয়ের (বিপিও) ওপর জোর দিয়েছেন। তরুণ সমাজের পারদর্শিতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে একটি দক্ষ মানবসম্পদের দেশ হিসেবে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় অগ্রগামী করে রাখতে সুদক্ষ সজীব ওয়াজেদ জয় নিরলস কাজ করে চলেছেন।
ডিজিটাল কমার্সের ওপর নির্ভর করে দেশের মফস্বল ও গ্রামের তরুণ তথা গৃহবধূরাও যাতে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন, সে জন্য তিনি সর্বজনীন নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করেছেন। শহরবাসীর পাশাপাশি সুলভে দ্রুতগতির ইন্টারনেট যাতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীও পেতে পারে, সে লক্ষ্যে এক দেশ, এক রেট ঘোষণা দিয়ে ব্যান্ডউইথের বিক্রয়মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব, আবেগ ও দেশপ্রেমের প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই তাঁর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের মধ্যে।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো