নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদকে হাতুরী দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের আবুল হোসেন ফকিরের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
হারুন অর রশিদ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ছেলে। তিনি নাগডেমড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এবং নাগডেমড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্যাটারীচালিত ভ্যানে করে বাড়ি থেকে সোনাতলা বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন আরুন অর রশিদ। পথি মধ্যে আবুল ফকিরের বাড়ির সামনে বটতলা নামকস্থানে ভ্যান ঠেকিয়ে একই গ্রামের ইউনুসের ছেলে মুরাদ, রসাইয়ের ছেলে আসাদুল, মধ্যপাড়া আদমের ছেলে ঠান্টুসহ বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যানকে টেনে হেঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে হাতুরি দিয়ে মারপিট করতে করে পা ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে স্বজনরা উদ্ধার করে প্রথমে সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তার অবস্থা গুরুতর হলে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল) কল্লোল কুমার দত্ত, ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ দিকে খবর পেয়ে পুলিশ আবুল ফকিরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে বাবুল ফকিরের ঘরের মেঝেতে গোপন সুড়ঙ্গ পায়। ওই সুড়ঙ্গটি ঢাকনা লাগিয়ে চকি দিয়ে ঢাকা ছিল। মই দিয়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে প্রবেশ করে সেখান থেকে বেশ কিছু হাসুয়া লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ। দিনব্যাপী অভিযান করে ১৩ জনকে আটক করে।
অটোভ্যানচালক আব্দুস সালাম বলেন, আমার ভ্যানে উঠে হারুন ভাই বাজারে যাওয়ার পথে ভ্যান থেকে নামিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও মারধরের চেষ্টা করা হয়।
নাগডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে তার ছোট ভাই জুয়েল রানা বলেন, শুক্রবার সকালে পুর্ব শত্রুতার জেরে বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজের লোকজন বাজারে যাওয়ার সময় আমার ভাইকে হত্যার করার জন্য ভ্যান থেকে নামিয়ে তাকে পিটিয়ে দু-পায়ের হাড্ডি গুড়া করে দিছে। থেতলে দিয়েছে মাথা ও হাত। হাফিজ চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাগডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রাহমান জানান, মারপিটের ঘটনার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। মারপিটের বিষয়টি আমি জানতামনা। পরে শুনেছি।সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ আগামি নির্বাচনে আমাকে প্রতিহত করতে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করেছি। তদন্ত করে অভিযোগ পেলে আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।