বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আগামীতেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অংশীদারত্ব এবং বন্ধুত্ব সুগভীর।’
মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মার্কিন কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল ও ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল শিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সিরামিকের মতো সম্ভাব্য এবং উৎপাদনশীল খাতে আরও বেশি সুবিধা নেবে এবং বিনিয়োগ করবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে বিশ্বস্ত সহযোগী। বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস হওয়ায় আমি আশা করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রবৃদ্ধির গতিপথ অব্যাহত রাখবে।’
দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সরকার আমাদের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করেছে। এটি টেকসই, যেমনটি বিশ্ব অর্থনীতিবিদ এবং সংস্থাগুলো স্বীকার করেছে। আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের ব্যবসা এবং বিনিয়োগের পরিবেশকে সহজ করা এবং সর্বোত্তম সম্ভাব্য নীতি কাঠামো বন্ধুত্বপূর্ণ করবো। আমি বিশ্বাস করি যে ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স এবং ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স আমাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে উভয় দেশের কোম্পানির সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে অবদান রাখবে।’
বাংলাদেশে ব্যবসায় বিদেশিরা অনুকূল পরিবেশ পাবেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে বাংলাদেশে আপনাদের বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী হবেন। আপনারা জানেন বাংলাদেশ এখন আরএমজি, চামড়া, প্লাস্টিক, পাট, আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং আরও অনেক কিছুতে তার অত্যাধুনিক উৎপাদন কারখানার জন্য স্বীকৃত হচ্ছে।’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৩৭ সালের মধ্যে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। আমরা গত সাড়ে ১৪ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিত ৫ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্য ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালে ২ হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশনের সব মানদণ্ড পূরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মধ্যে থাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল অনুসরণ করছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। সব ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের শিক্ষা ও সাক্ষরতার হার উন্নতি করেছি এবং আরও আকর্ষণীয় করে তৈরি করেছি।’
বিনিয়োগনীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্মুক্ত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগনীতি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি উদার শিল্পনীতি, ওয়ান-স্টপ পরিষেবা, শতভাগ বিদেশি মালিকানার জন্য একটি ভাতা, একটি সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫ বছরের কর ছাড়। এছাড়া রয়েছে আমদানি করা যন্ত্রপাতিতে ভ্যাট ছাড়, সুবিন্যস্ত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।’
তিনি বলেন, ‘শিল্পায়নের সুবিধার্থে আমরা সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯টি হাইটেক এবং সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করছি।’