নিজস্ব প্রতিনিধি : চিড়িং মাছ একদম নতুন না হলেও সাম্প্রতিককালে এই মাছের নাম নতুন করে শুনছে । শুধু নামে নতুন হলেও এই মাছ আমাদের দেশে আগেও ছিল । আগে কখনো এই মাছের নাম শোনা যায়নি, ঠিক তেমনিভাবে দেখাও যায়নি। সাম্প্রতিককালে সুন্দরবনের লোনাজলে এই মাছের দেখা মিলেছে।
প্রাণিবিশারদরা বলেন, চিড়িং মাছ আমাদের দেশের মাছের তালিকায় ছিল, তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে দেখা যায়নি। সংখ্যায় কম ছিল।
জানা যায়, এই মাছের ইংরেজি নাম এশিয়ান ডর্ফ মাডস্কিপার। আর বৈজ্ঞানিক নাম পেরিওফথালমোদন সেপ্টেমরাডিয়াটাস। এদের কোনো বাংলা নাম নেই। অঞ্চলভেদে ‘ডাকুর’ বা ‘ডাকার’ নামে পরিচিত। চলতি বছরের ১৫ আগস্ট মাসে সুন্দরবনের করমজল এলাকা থেকে এই মাছের ছবি তুলেছেন নেচার অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন কমিউনিটি গ্রুপের ফটোগ্রাফার পাবনার এহসান আলী বিশ্বাস।
এহসান আলী বিশ্বাস বিডি২৪ভিউজকে জানান , এটি আমার কাছে নতুন একটি মাছ। আগে কখনো দেখেনি । মাছ অনেকটা ব্যাঙ বা ব্যাঙাচির মতো। এদের রয়েছে প্রসারিত চোখ। শরীর টর্পেডো-আকৃতির। বুকের দিক পেশিবহুল। পিঠে দুটি পাখা রয়েছে। এরা উভচর মাছ। বুকের নিচের পাখার সাহায্যে মাটিতে চলাচল করে। চিড়িং মাছ অধিক সময় পানিতে থাকলে মারা যায়। তাই বেঁচে থাকার জন্য এরা লাফ দিয়ে ওপরে ওঠে।
মাটিতে থাকা গাছের শিক বা পাথরের পাশে এসে আশ্রয় নেয়। অধিকাংশ চিড়িংই সাধারণত জলপাই-বাদামি রঙের হয়। তবে বেশ কিছু প্রজাতি নীল রঙের হয়ে থাকে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকাজুড়ে এদের বাস। এরা আকারে ছোট। দেখতে খুব সুন্দর। তবে এটা তাদের স্থায়ী রং নয়। বর্ষা মৌসুম এদের প্রজনন কাল। এ সময় তারা তাদের সৌন্দর্য মেলে ধরে। নিজের উজ্জ্বল বর্ণ প্রদর্শন করে। আবার চাইলে অনুজ্জ্বল হতে পারে। এরা নিজেকে বিপদগ্রস্ত মনে করলে গায়ের রং বদলে মেটে রং ধারণ করতে পারে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, এবার চিড়িং মাছের দেখা মিলেছে, এটা আমাদের জন্য সুখবর। শুধু বাঘের মতো মেঘা-প্রাণী নয়, সুন্দরবন পেরিওফথালমোদন সেপ্টেমরাডিয়াটাস প্রজননকারী; এর অনেক ছোট প্রজাতীয় বাসস্থান। তিনি আরও জানান এই মাছে আগেও ছিল, সাম্প্রতিককালে এটির দেখা মিলছে সুন্দরবনে।