বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বৈদেশিক কর্মসংস্থানের রিক্রুটিং প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের (দালাল) আইনি কাঠামোর আওতায় এনে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী (সংশোধন) বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বিলে নিবন্ধনের মাধ্যমে তাদের স্বীকৃতি দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
গতকাল বৃহষ্পতিবার বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ। পরে বিলটির ওপর জনমত যাচাই, বিলটি পুনরায় কমিটিতে ফেরত পাঠিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং বেশ কিছু সংশোধনী দেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। যদিও ভোটে এসব নিষ্পত্তি করেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। পরে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী (সংশোধন) বিল ২০২৩ বিলটি পাসের জন্য সংসদে প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়ে যায়।
পাস হওয়া এ বিলের সংজ্ঞায় ‘সাব এজেন্ট বা প্রতিনিধি’র সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাব এজেন্ট বা প্রতিনিধি অর্থ এই আইনের অধীনে নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি, যিনি কোনো রিক্রুটিং এজেন্টের সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি হিসেবে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য এই এজেন্টের চাহিদা অনুযায়ী অভিবাসী কর্মী সংগ্রহ করেন।
এ ছাড়া বিলে অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে ব্যাংক ঋণ, কর রেয়াত, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৃত্তি দেয়া ইত্যাদি প্রবর্তন ও সহজের ব্যবস্থা করার বিধান রাখা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বৈদেশিক কর্মস্থলে নারী অভিবাসী কর্মীদের সম্মান, মর্যাদা, অধিকার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ আর্থিক ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি নেয়া যাবে।
বিলটিতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জবাবদিহিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিদ্যমান প্রশাসনিক ব্যবস্থার অতিরিক্ত হিসেবে অপরাধ সংঘটনের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। তদন্ত ও শুনানি ছাড়া অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় রিক্রুটিং লাইসেন্সের কার্যক্রম স্থগিত করার বিধান করা হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের রিক্রুটিং প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনি কাঠামোর জবাবদিহিতার আওতায় আনার লক্ষ্যে সাব-এজেন্ট বা প্রতিনিধি নিয়োগ এবং সংশ্লিষ্টদের দায়-দায়িত্বের বিধান সংযোজন করা হয়েছে ।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, নারীরা লাশ হয়ে ফিরে আসছেন। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দিচ্ছে। দেশে মরদেহ আসার পর পোস্টমর্টেম করা উচিত। এভাবে গিয়ে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণের চেয়ে দেশে কাজের সুযোগ করে দেয়া উচিত।
যারা কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশে যান এয়ারপোর্টে এমনভাবে নিগৃহীত হন যেন তারা অপরাধী। আসার সময়ও হয়রানির শিকার হন। এয়ারপোর্টে তাদের জন্য আলাদা ডেস্ক করা দরকার। জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বিদেশে শ্রমিকদের পাসপোর্ট অ্যাম্বাসির হাতে নয়, ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আসতে হবে। এই রেমিটেন্স বাদ দিলে কী আছে? গার্মেন্টস ৮০ ভাগ কাঁচামালে চলে যায়। একমাত্র তাদের রেমিটেন্স সরাসরি রিজার্ভে হয়। তাদের বরাদ্দ খুবই কম। গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, নারী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে যায়। তাদের দুরাবস্থার কথা সবার জানা। কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ দূতাবাস নেয় কি না তা খুব জানা যায়। তিনি বলেন, নারী শ্রমিক যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে যে কাজে গিয়েছে স্বাস্থ্যগত অবস্থা তাদের ব্যাপারে মানসিক শারীরিক অবস্থা নিয়ে দূতাবাস ৩ মাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট দিতে বাধ্য থাকলে নারী শ্রমিকদের অনেক উন্নতি হবে। জাপার এমপি রওশন আরা মান্নান নারী শ্রমিকদের দূরবস্থার কথা বিবেচনা করে এদের না পাঠানোর দাবি জানান।