বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : জলবায়ু সংকট এড়াতে বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশগুলোকে সৎ হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি, বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন এবং আসন্ন সংকট এড়াতে তাদের ন্যায্য অংশীদারত্বের বিষয়ে সৎ থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বুধবার নিউইয়র্কে ইসিওএসওসি চেম্বারে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা প্রদান : ত্বরান্বিত উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং অভিযোজন ও সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কবার্তা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক সম্মেলনের উচ্চস্তরের বিষয়ভিত্তিক অধিবেশনে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে অভিযোজন এবং আগাম সতর্কতায় বিনিয়োগ করা সঠিক। তিনি বলেন, আমরা আশা করি আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা জলবায়ু ন্যায্যতা প্রদানের জন্য এই সুযোগগুলোকে কাজে লাগাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের দুটি উদ্যোগে সমর্থন দিতে বাংলাদেশ এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশ এই এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন দিতে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভূমিকম্প মডেলিং নিয়ে দেশব্যাপী একটি প্রদর্শনী মহড়া করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি বলেন, তারা আর্থ অবজারভেটরি হিসাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু টু নিয়ে কাজ করছেন। বাংলাদেশ দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজাকার সহযোগিতার মাধ্যমে অন্যান্য দুর্বল দেশগুলোর সঙ্গে তার দক্ষতা বিনিময় করতে ইচ্ছুক।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ‘সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কতা’ এমডিবি এবং আইএফআইকে এ ধরনের প্রচেষ্টায় যোগ দিতে উৎসাহিত করতে সক্ষম হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ একটি সমন্বিত বহু বিপত্তি প্রাথমিক সতর্কীকরণ পদ্ধতির সর্বশেষ জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা আবহাওয়ার পূর্বাভাসের নিয়মিত আপডেট দেওয়ার জন্য মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিষয়ভিত্তিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে আসেন।
বিবিএনজেতে সই করলেন প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিক মাছ ধরা এবং অন্যান্য মানবিক কর্মকাণ্ডের কারণে ভঙ্গুর সামুদ্রিক পরিবেশের ক্ষতির হাত থেকে বিশ্বের মহাসাগর এবং নদীগুলোকে রক্ষায় মেরিন বায়োডাইভারসিটি অব এরিয়াজ বিয়ন্ড ন্যাশনাল জুরিসডিকশন (বিবিএনজে) চুক্তিতে সই করেছেন।
জাতিসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি বিল্ডিংয়ে ট্রিটি ইভেন্ট এলাকার গ্রাউন্ড ফ্লোরে বুধবার ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দ্য ল অফ দ্য সি’র অধীনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ কথা জানান। চুক্তিতে সাধারণ ঐতিহ্য হিসাবে বর্ণিত জেনেটিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। এ সময় অন্যদের মধ্যে সায়মা ওয়াজেদও উপস্থিত ছিলেন।
সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ-প্রধানমন্ত্রী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কভিড-১৯ মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু সংকট থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এসডিজি-৩’র অন্তর্ভুক্ত এসডিজিগুলো কার্যকরে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপাক্ষিক বুথে মা, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য অংশীদারত্বের (পিএমএনসিএইচ) চেয়ার হেলেন ক্লার্কের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন পরে এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সরকার তার স্বাস্থ্যসেবা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার অনুযায়ী চলতি অর্থবছর ২০২৩-২৪ সালে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি জাতীয় স্বাস্থ্য খাতের কৌশলগত পরিকল্পনা (২০১১-২০৩০) বাস্তবায়ন করছে।
বৈঠকে হেলেন ক্লার্ক শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বাস্থ্য খাতে সার্বিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে সায়মা ওয়াজেদ ও ড. মোমেন উপস্থিত ছিলেন।