বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আবারও উন্মুক্ত হচ্ছে প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগসীমা। এ বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা এলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইচ্ছেমতো বন্ডে বিনিয়োগ এবং পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। ডলার সংকট ও বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে বন্ডে বিনিয়োগসীমা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি পুনর্বিনিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছেন প্রবাসীরা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর সরকার তিন বন্ডে প্রবাসীদের জনপ্রতি বিনিয়োগ সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি বন্ধ করে দেয় পুনর্বিনিয়োগ। ফলে তিনটি বন্ডে প্রবাসীদের বিনিয়োগ কমেছে। অন্যদিকে, হাতে থাকা বন্ডগুলো ভাঙাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ডলার বাজারের অস্থিতিশীলতার মধ্যে প্রিমিয়াম বন্ডের মুনাফার হার কমানোয় সরকারি তিনটি বন্ডে প্রবাসীদের নিট বিনিয়োগ ৪৯ মিলিয়ন ডলার কমেছে। এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগসীমা ও সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া উচিত। বিনিয়োগসীমা ও সুদের হারে ক্যাপ করে রাখার কোনো মানে হয় না। কারণ, ডলার সংকট আছে, ডলারের প্রয়োজন আছে। তাই যখন যেটা প্রয়োজন তখন সেটা না করলে কোনো লাভ হয় না। যখন বন্ডে বিনিয়োগসীমা ও সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল তখন বিশ্বব্যাপী বন্ডে বিনিয়োগের সুদের হার ছিল শূন্য। এখন বিশ্বব্যাপী বন্ডের সুদহার ৫-৬ শতাংশ। তাই বন্ডে বিনিয়োগসীমা, সুদহার ও পুনর্বিনিয়োগ বন্ধ রাখার কোনো মানে হয় না। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, বৈধপথে প্রবাসী আয় বাড়াতে সরকার প্রবাসী বন্ডে বিনিয়োগের সীমা তুলে দেওয়ার বিষয়টি ভাবছে। বিনিয়োগসীমা আরোপ করার কারণে গত দুই বছরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে বন্ডে বিনিয়োগ।
বিনিয়োগসীমা তুলে দেওয়া ও পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ দিলে বন্ডে বিনিয়োগ আবারও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রবাসী বিনিয়োগ কমে যাওয়ার বিষয়ে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরী বলেন, প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ নিশ্চিত মনে করে ইউএস ডলার বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ওয়েজ আর্নার্স বন্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন। দুই বছর ধরে বন্ডে বিনিয়োগসীমা আরোপ করার পাশাপাশি পুনর্বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কমিয়ে দেওয়া হয়েছে সুদ। ফলে কোনো প্রবাসী বিনিয়োগে আগ্রহ না দেখিয়ে বিনিয়োগ নিজ নিজ দেশে ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে এসব বন্ডে বিনিয়োগসীমা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি পুনর্বিনিয়োগের সুবিধা চালু করা দরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ওয়েজ-আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ডের নিট বিক্রি কমেছে ৩৫ মিলিয়ন ডলার। তার আগের বছর এ বন্ডের নিট বিক্রি ছিল ১০৭ মিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে ছিল ১৩৫ মিলিয়ন ডলার। দেশে ১৯৮৮ সালে ৫ বছর মেয়াদি ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড এবং ২০০২ সালে ৩ বছর মেয়াদি ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড চালু হয়। তিন থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়া সাপেক্ষে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এ বন্ড তিনটিতে সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যেত। যদিও তারপর গড় সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।