স্টাফ রিপোর্টার : পাবনা সদর উপজেলার চরাঞ্চলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জালে ধরা পড়েছে দেশের বিলুপ্তপ্রায় সবচেয়ে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার। খবর পেয়ে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশের সদস্যরা সাতটি উদ্ধার করে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার হিমায়েতপুরের চর ভবানীপুর গ্রামের এক জেলের চায়না দুয়ারীতে আটক পড়ে সাপটি। পরে উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে স্নেক রেসকিউ কমিটির সদস্যরা।
টিমের অভিজ্ঞ রেস্কিউয়ার এবং সভাপতি রাজু আহমেদ জানান, শনিবার সকালে আমাদের হটলাইনে একটি ফোন আসে। আমরা ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিমের সাধারণ সম্পাদক প্রীতম সুর রায়কে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল যাই এবং সাপটিকে উদ্ধার করি। সাপটিকে উদ্ধারের পর সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং সাপে কামড়ালে করণীয় সম্পর্কে সকলকে দিকনির্দেশনা দেই। উদ্ধারকৃত সাপটি পরবর্তীতে বন বিভাগের সাথে কথা বলে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছেড়ে দেয়া হবে।
প্রীতম সুর রায় জানান, রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া হচ্ছে Viperidae পরিবারের একটি মারাত্মক বিষধর সাপ। যে চারটি সাপের কামড়ে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হন, সেগুলোর মধ্যে রাসেল ভাইপার অন্যতম। এদের বিষ মূলত হেমোটক্সিক। তবে এলাকা ভিত্তিতে এদের বিষের প্রয়োগ মাত্রা এবং বিষের উপাদানের পরিমাণে কম-বেশী পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
তারা জানান, মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর মধ্যে একটি সহাবস্থান তৈরী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বণ্যপ্রাণী, মূলত সাপ নিয়ে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২০ সালে সিদ্দিকুর রহমান রাব্বি টিমটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেক কম সময়ের মধ্যেই সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্ধার কাজ শুরু করেন। বর্তমানে এই টিমটিতে ২৫ জন প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত রেস্কিউয়ার রয়েছেন। যারা বিপদগ্রস্ত অথবা মানুষের বাসস্থানে ঢুকে পড়া কোন সাপ এবং অন্য বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করে আবার সেগুলোকে প্রকৃতিতে তাদের অবস্থানে ফিরিয়ে দেন। এছাড়াও অসুস্থ সাপ এবং অন্যান্য বণ্যপ্রাণীর চিকিৎসার মাধ্যম্যে সেগুলো সুস্থ করে অবমুক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০০০ সাপ উদ্ধার করেছে স্নেক রেস্কিউ টিম বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পাবনা অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। রাসেল ভাইপার আমাদের দেশের সাপ নয়, এগুলো ভারত থেকে আসে। ভারত হয়ে পদ্মা নদী দিয়ে রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও পাবনার কিছু অঞ্চলে এগুলো পাওয়া যাচ্ছে।’