বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : স্কুল বা কলেজের কমিটির স্বেচ্ছাচারিতারোধে প্রতিষ্ঠানের প্রধানের পদে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার। বর্তমানে এই দু’টি পদে ম্যানেজিং বা গভর্নিং বডি তাদের ইচ্ছামতো নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা রাখে। তবে নতুন এই উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হওয়ার প্রবণতাও অনেকাংশেই কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। আজ সোমবার এ বিষয়ে কর্মপন্থা নির্ধারণে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে অংশীজনদের মতামত নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হবে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগের কথা ভাবছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন করতে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীন কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হয়। এর ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ প্রায় নেই। কিন্তু স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি এখনো পরিচালনা কমিটির হাতে রয়ে যাওয়ায় এসব পদে নিয়োগে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পেতে হয়। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে সাড়ে ৩ লাখ থেকে শুরু করে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়মবহির্ভূতভাবে দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও পরিচালনা কমিটিকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় এসব পদে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ আছে। এর ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চরম হয়রানির শিকার হতে হয়।
তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিয়োগ প্রার্থীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেয়াসহ স্কুলে লেখাপড়ার মান বজায় রাখা, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন, স্থানীয়দের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে যোগ্য ও দক্ষদের বাছাই করার লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে চায় সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে একটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে। এতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবসহ নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত থাকবেন। সভার পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আমরা সকলেই আন্তরিক। আশা করছি কর্মশালায় এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতার বিষয়ে শর্ত কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অনেক অদক্ষ শিক্ষকও প্রধান শিক্ষকের পদে সমাসীন হয়ে যায়। এ বিষয়টি বন্ধ করতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার আমরা সেটি নেব। তথ্যমতে, সারা দেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৩৫টি, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০ হাজার ৩১৬টি, বেসরকারি মাদরাসা রয়েছে ৮ হাজার ২২৯টি।