পাবনা প্রতিনিধি : অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এবার করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির নামে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। এই মামলা গ্রহণ করার পর স্বয়ং পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, এই মামলায় যারা ঘটনাস্থলে ছিলেন না বা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের নাম অবশ্যই চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া হবে। তার আগে এই মামলায় তাদের গ্রেফতারও করা হবে না বলে জানান সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান।
বিভিন্ন সুত্র জানায়, পাবনার বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পান জাতসাখিনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু। মনোনয়ন নিয়ে এলাকায় ফিরতেই সাঁথিয়া বেড়ার সীমান্তবর্তি এলাকা সিএন্ডবি মোড়ে নৌকা প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলার শিকার হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল হক বাবু। হামলায় ৪৫টি গাড়ী ভাংচুর করা হয় এবং অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় সানিলা গ্রামের মজিদ মোল্লার ছেলে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় সাঁথিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উকিলসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ৩৮ জন নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনকে আসামী করে ১৪৮/১৪৯/১৫১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬/১৪৭ এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ১৫ তারিখ ১৫-১১-২০২০)। এই মামলায় ৩৮ নং আসামী করা হয় বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং গুপিন্দা গ্রামের মৃত নিফাজ উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৫৫) কে। আফজাল হোসেন বেড়া উপজেলার রূপপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
আফজাল হোসেন মোবাইলে বলেন, “তিনি গত ১৬ দিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হওয়ায় সম্প্রতি অক্সিজেন সার্পোট নিয়ে নিজ বাসায় চিকিৎসীন আছেন। তিনি অক্সিজেন ছাড়া এক মুহুর্ত চলতে পারেননা। করোনার জন্য তিনি প্রতিদিন অনেক ঔষুধ সেবন করতে হচ্ছে। শাররীক ভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম। ঘটনাস্থলে যাওয়া তো দুরের কথা বাসার মধ্যে উঠে দাড়ানোর ক্ষমতা নেই। এই সময় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দেওয়া আমার জীবন নাশের শামিল”।
এই মামলার বাদী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অনেক বড়। হামলার সময় কে ছিল কে ছিলনা তা আমি একা বলতে পারবো না। আর রাতে ঘটেছে তাই প্রত্যক্ষদর্শিরা যারা আছে তাদের সঙ্গে আলাপ করে সাংবাদিকদের পরে জানাবেন বলে জানান। এ ছাড়া মামলার বাদী জাহিদুল ইসলাম বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলালের সঙ্গে কথা বলারও পরামর্শ দেন।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ দুলাল বলেন, যারা ঘটনাস্থলে ছিলেন এবং হামলার সঙ্গে যুক্ত এবং তাদেরকেই আসামী দেওয়া হয়েছে। নিরিহ কাউকে আসামী করা হয়নি।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় যাদের আসামী করা হয়েছে তার ৮০ ভাগ বেড়া উপজেলার মানুষ। সাঁথিয়া উপজেলার মাত্র ২০ শতাংশ মানুষকে আসামী করা হয়েছে। তাই আমরা অনেককে চিনিনা। ৩৮ নং আসামী আফজাল হোসেন করোনা আক্রান্ত বলে শুনেছি। তিনি আরও বলেন, এই মামলায় যারা ঘটনাস্থলে ছিলেন না বা চিকিৎসাধীন ছিলেন তাদের নাম অবশ্যই চার্জশীট থেকে বাদ দেওয়া হবে। আর এই মামলায় তাদের গ্রেফতারও করা হবে না বলে তিনি জানান।