বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আগামী ৫ থেকে ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট’ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বুধবার (৪ অক্টোবর) পৃথক বাণীতে তারা এ শুভেচ্ছা জানান। রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন তার বার্তায় বলেন, “বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগ আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সম্মেলন ২০২৩’ উপলক্ষে এতে অংশগ্রহণকারী, সংগঠক, অবদানকারী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্পের মাঝে ২০৪১ সালের মধ্যে এদেশের জাতিকে আধুনিক, জ্ঞান-বিজ্ঞানে রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি নিহিত রয়েছে। এই ব্যাপক ও সমন্বিত পরিকল্পনার লক্ষ্য- এই দেশে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে তরান্বিত করা ও সমাজের মঙ্গল বৃদ্ধি করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো আরো টেকসই ও প্রযুক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ একটি সুদক্ষ ও বুদ্ধিমান জাতি তৈরি করা।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “এই সাহসী কৌশলের রূপরেখা আমাদের দেশকে একটি গর্বিত মধ্যম আয়ের সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হতে, একটি শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত গড়ে তুলতে ও বিশ্বমানের অবকাঠামো দিয়েছে, যা বিশ্বের দরবারে একটি উদীয়মান দেশ হতে সহায়ক হবে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ২০২৩’ আমাদেরকে একটি প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ও ডিজিটালভাবে সমৃদ্ধ স্মার্ট জাতি হওয়ার যাত্রায় একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজের এই ভিত্তিকে গ্রহণ করে আমরা একটি রূপান্তরমূলক পথে যাত্রা করছি, যা আমাদের অর্থনীতিকে গতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। আইসিটি খাত বাংলাদেশের গতিশীল চিত্রের প্রতিশ্রুতির বাতিঘর হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বিগত কয়েক বছরে, সরকারি সমর্থন এবং দেশের সুযোগ্য ও দক্ষ তরুণদের পেশাদারী প্রচেষ্টায় এই খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণসহ আইসিটি খাতে আমাদের অর্জন পরিষেবাগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী আমাদের খ্যাতি বাড়িয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সম্মেলন উদ্ভাবন পরিচর্যা ও বৈশ্বিক সহযোগিতায় আমাদের নিষ্ঠার প্রমাণ। এটি বিশ্ব মঞ্চে আমাদেরকে অবস্থানকে আরো সুদঢ় করে।’
তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট একটি প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং কৌশল বিনিময় করা যা মৌলিক স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং কার্যকর প্রশাসনকে একীভূত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের নাগরিকদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পাশাপাশি বৈশ্বিক উদ্ভাবনের পরিবেশে অবস্থানের পথ প্রশস্ত করতে পারি।’
রাষ্ট্রপতি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ২০২৩’ বাস্তবে পরিণত করতে যারা অবদান রেখেছে, তাদের সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আসুন আমরা হাতে হাত মিলিয়ে এই উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রিয় জাতির জন্য অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির পথে চলি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, “আমি এটা জেনে আনন্দিত যে ঢাকায় ৫ থেকে ৭ অক্টোবর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সম্মেলন ২০২ ‘ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ আনন্দঘন উপলক্ষে আমি ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যকে বাস্তবে পরিণত করতে যারা নিরলসভাবে অবদান রাখছেন, তাদের সকলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ শুধু একটি ধারণা নয়, এটি একটি সাহসী ও গতিশীল উদ্যোগ, যা ডিজিটালি সমৃদ্ধ ও সক্ষম সমাজ, সমৃদ্ধিশীল অর্থনীতি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনের লক্ষ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী চেতনার অনুসরণ করছে।”
তিনি বলেন, ‘২০৪১-এর দিকে অগ্রসর হওয়ার এই সময়ে আমরা স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে, স্মার্ট গভর্নেন্স পরিচর্যা, স্মার্ট অর্থনীত পরিচালনা ও স্মার্ট সমাজ গড়ে তুলতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একটি উল্লেখযোগ্য রূপান্তরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত করছি। এই ভিশন কেবল অবকাঠামো আধুনিকীকরণের নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের জীবনমান উন্নয়নেরও। এই ভিশন হলো তরুণদের ক্ষমতায়ন, ব্যবধান ঘোচানো ও কাউকে পেছনে না ফেলে সকলের জন্য সুযোগ সৃষ্টি।’
তিনি বলেন, ‘আমি এ কথা জানাতে পেরে আনন্দিত যে গত কয়েক বছরে ডিজিটাল সেবা উন্নয়নসহ ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণ, প্রাণবন্ত সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার শিল্প বিকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশের আইসিটি খাত গুরুত্বপূর্ণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এসব সাফল্য অর্থনৈতিক উন্নয়নকে জোরদার করে এবং দেশকে প্রযুক্তি চালিত একটি ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ২০২৩’ এমন এক উদ্যোগ যা বিশেষজ্ঞ, সিদ্ধান্ত প্রণতা ও নেতৃবৃন্দসহ এ খাতের প্রত্যেককে একটি একক মঞ্চে মিথস্ক্রিয়া ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, এটি ডিজিটালি ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধের দিকে দেশের অভিযাত্রাকে তরান্বিত করবে। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, সমান্তরাল বিচিত্র আয়োজনের সমাহারের পাশাপাশি এই শীর্ষ সম্মেলন এসব আলোচনাকে আরো সমৃদ্ধ করবে এবং প্রযুক্তিগতভাবে অধিকতর সমৃদ্ধ একটি জাতিতে পরিণত হওয়ার অভিযাত্রায় অবদান রাখবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী উভয়েই ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট-২০২৩’-এর এই ব্যাপক সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।