নিজস্ব প্রতিনিধি : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রথম ব্যাচের জ্বালানির হস্তান্তর উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) প্রকল্প সাইটে এক জামজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজিত হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আর্ন্তজাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ভার্চুয়ালি অংশগ্রহন করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রিয় পারমানু শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ, বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ উর্দ্ধতন সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাশিয়া এবং বাংলাদেশের শীর্ষ নের্তৃবৃন্দের অনুমতিক্রমে পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। রসাটম মহাপরিচালক বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর হাতে জ্বালানি হস্তান্তরের সনদ তুলে দেন। সনদে এই মর্মে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় যে, সকল নিরাপত্তা মান সম্পূর্ণভাবে অনুসরণ করে জ্বালানি হস্তান্তর করা হয়েছে। রূপপুর প্রকল্পের জন্য জ্বালানি প্রস্তুত করেছে রাশিয়ার নভোসিবিরস্ক কেমিক্যেল কনসেনট্রেটস প্লান্ট (এনসিসিপি) যা রসাটমের জ্বালানি ডিভিশনের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ পরমাণ শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সক্রিয় নির্দেশনা ও তত্বাবধানে জ্বালানিনির পস্তুত ও পরিবহণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে বলেন, ‘রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আজকের দিনটি একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করলো। পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণ করার পর রূপপুর এনপিপি এখন একটি পারমাণবিক স্থপনা হিসেবে স্বীকৃতি পেল, একইসঙ্গে বাংলাদেশ সেইসকল দেশের কাতারে সামিল হলো যারা শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য পারমাণবিক প্রযুক্তি ধারণ করছে। রসাটমের জন্য এটি একটি বিশাল সম্মানের ব্যাপার যে, সংস্থাটি এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে যা স্থিতিশীল বিদ্যুতের নিশ্চয়তা দিবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশে অন্যন্য প্রকৃতি সংরক্ষণে সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করে বলেন,‘বিশেষ এই মূহুর্তটির জন্য আমরা অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলাম। এটি শুধূমাত্র পাবনা জেলার জনগণের জন্য নয়, সমগ্র জাতির জন্য একটি উৎসব। আজকে আমরা জ্বালানি ডেলিভারী সনদ গ্রহণ করেছি। যার মাধ্যমে বাংগালি জাতি হিসেবে আমাদের অর্জনের স্বীকৃতি মিলল। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জীবনযাত্রায় প্রাণচঞ্চল এবং বর্ণিল। এ ঘটনাটিকে আমরা বর্ণিলভাবে উদযাপন করছি। গোটা জাতির মাঝেই আজকে উৎসবের আমেজ।’
রুশ আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুটি ইউনিট স্থাপতি হচ্ছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর ১,২০০ রিয়্যাক্টর ব্যবহার হচ্ছে। এ রিয়্যাক্টরগুলো সকল আর্ন্তজাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। রিয়্যাক্টরগুলো জীবনকাল ৬০ বছর হলেও তা আরও ২০ বছর বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।