বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জন্য সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা বেতন নির্ধারণ করে নূন্যতম মজুরির খসড়া সুপারিশ প্রকাশ করেছে সরকার; যেখানে পাঁচটি গ্রেড রাখা হয়েছে।
অপরদিকে পোশাক কারখানার কর্মচারীদের চারটি গ্রেডে বেতন দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড; যেখানে তারা সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৮০০ এবং সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৮০০ টাকা বেতন পাবেন।
আগে শ্রমিকদের জন্য গ্রেড ছিল সাতটি যা কমিয়ে পাঁচটি করা হয়েছে। তবে কর্মচারীদের গ্রেড সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঢাকার নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লার স্বাক্ষরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শনিবারের তারিখে এ গেজেট প্রকাশ করেছে। তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের মধ্যে এ খাতের শ্রমিকদের জন্য মজুরির খসড়া প্রকাশ করে গেজেট করলো নিম্নতম মজুরি বোর্ড।
এদিকে রোববার শ্রমিকদের কয়েকটি সংগঠনের জোট মজুরি বোর্ডের নির্ধারণ করা সর্বনিম্ন মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকার বিষয়ে নিম্নতম মজুরি বোর্ডে লিখিত আপত্তি জানিয়েছে। তারা এ মজুরি ২৫ হাজার টাকা করা এবং আগের ১ ও ২ নম্বর গ্রেড বাতিল করে শ্রমিকদের ঠকানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে।
এর আগে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিক বৈঠকের পর গত ৭ নভেম্বরের সভা শেষে মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করে সরকার। এটি আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার কথা।
সেদিন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি ঘোষণা দিয়েছিলেন। বোর্ডের নির্ধারণ করা সেই মজুরি কাঠামোই এখন খসড়া সুপারিশ হিসেবে প্রকাশ করা হল।
এ খসড়া নূন্যতম মজুরি নিয়ে কোনো সুপারিশ বা আপত্তি থাকলে আগামী ১৪ দিনের মধ্যে তা নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। সেসব বিবেচনায় নিয়ে সরকারের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ করবে বোর্ড।
গেজেটে বলা হয়েছে, নিম্নতম মজুরি সমন্বয় করে এক বছর কর্মরত থাকার পর শ্রমিক-কর্মচারীদের মূল মজুরি বছরে ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। সোয়েটারসহ অন্যান্য গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরে ‘ফুরনভিত্তিক’ (পিসভিত্তিক) মজুরিতে কর্মরত শ্রমিকরাও ৫ শতাংশ হারে বেতন বাড়ানোর সুবিধা পাবেন। খসড়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জন্য মজুরির পাঁচটি গ্রেড রাখা হয়েছে। গ্রেড-১ এ ৮ হাজার ২০০ টাকা মূল মজুরিতে শ্রমিকদের মোট বেতন দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৫০ টাকা।
গ্রেড-২ এ ৭ হাজার ৮০০ টাকা মূল মজুরিতে মোট বেতন হবে ১৪ হাজার ১৫০ টাকা। গ্রেড-৩ এ ৭ হাজার ৪০০ মূল মজুরিতে মোট বেতন ১৩ হাজার ৫৫০ টাকা; গ্রেড-৪ এ ৭ হাজার ৫০ টাকা মূল মজুরিতে মোট বেতন ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ২৫ টাকা। সর্বনিম্ন গ্রেড-৫ এ ৬ হাজার ৭০০ টাকা মূল মজুরিতে একজন শ্রমিকের মোট বেতন হবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
পাঁচ গ্রেডেই মূল মজুরির সঙ্গে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা এবং খাদ্য ভাতা যোগ করে মোট বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে পোশাক কারখানার কর্মচারীদের জন্য মজুরির চারটি গ্রেড সুপারিশ করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। গ্রেড-১ এ ১০ হাজার ৯০০ টাকা মূল মজুরিতে মোট বেতন সুপারিশ করা হয়েছে ১৮ হাজার ৮০০ টাকা। গ্রেড-২ এ ৯ হাজার টাকা মূল বেতনে কর্মচারীদের মোট বেতন হবে ১৫ হাজার ৯৫০ টাকা।
এছাড়া গ্রেড-৩ এ ৮ হাজার ৫০০ টাকা মূল বেতনে মোট বেতন ১৫ হাজার ২০০ টাকা এবং গ্রেড-৪ এ ৬ হাজার ৯০০ টাকা মূল বেতনে মোট বেতন ১২ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
শ্রমিকদের মতো পোশাক কারখানার কর্মচারীদেরও মূল বেতনের সঙ্গে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা এবং খাদ্য ভাতা যোগ করে মোট বেতন সুপারিশ করা হয়েছে। পোশাক কারখানর শ্রমিক ও কর্মচারীদের মধ্যে কে কোন গ্রেডের আওতায় বেতন পাবেন, তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।