বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস হিসেবে আরও চার কেন্দ্র থেকে সৌরবিদ্যুৎ কিনবে সরকার। গতকাল বুধবার এসব কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার পাশাপাশি সার, তেল ও গম কেনাসহ ৩১ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ দুটি বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব অনুমোদনের তথ্য দেন। এদিন চারটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই ২০ বছর ধরে বিদ্যুৎ কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব। খবর বিডিনিউজের।
এক প্রস্তাবে এনারগন রিনিউবেলস বিডি লিমিটেড ও পিডব্লিউআর এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি’র প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্র থেকে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ১০ টাকা ৯৯ পয়সায় কেনার সিদ্ধান্ত হয়। কোম্পানিটি ময়মনসিংহের ত্রিশালে ২৪০ মেগাওয়াট (এসি) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে। বিদ্যুৎ কিনতে ব্যয় হবে আট হাজার ৫৫৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আরেক প্রস্তাবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেরে (বিউবো) অধীনে কক্সবাজারের চকরিয়ার ৩০ মেগাওয়াট (এসি) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১১ দশমিক ০৩ টাকা দরে কেনা হবে। এজন্য এক হাজার ৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এছাড়া কক্সবাজার সদরে আরেক প্রকল্পের অধীনে ৫০ মেগাওয়াট (এসি) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে জৌলস পাওয়ার। কোম্পানিটির কাছ থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ কেনা হবে ১০ দশমিক ৯৪ টাকায়। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৭১ কোটি ২০ লাখ টাকা।
চতুর্থ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায়। ১০০ মেগাওয়াটের (এসি) এ কেন্দ্র থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা হিসেবে ১০ টাকা ৯৯ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনতে ২০ বছরে ব্যয় হবে তিন হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা।
এদিনের উভয় বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের ৪টি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ২টি, বাণিজ্যের ২টি, শিল্পের ২টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ২টি, স্থানীয় সরকার বিভাগের ২টি, সড়ক পরিবহন ও মহাসগক বিভাগের ১টি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ১টি এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। এসব প্রস্তাবের আর্থিক মূল্য ৩১ হাজার ৬৫৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। মোট ব্যয়ের ৩১ হাজার ৩৫৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা সরকার ও অবশিষ্ট ২৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা দেশীয় ব্যাংক ও বৈদেশিক অর্থায়ন থেকে আসবে।
সভায় জানানো হয় কাতারের একটি কোম্পানি ও কাফকো থেকে ২০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার। এদিন আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আরব আমিরাতের একটি কোম্পানি থেকে ১৭৫ কোটি টাকায় ৫০ হাজার টন এবং সিঙ্গাপুরের মেসার্স অ্যাগ্রো কর্প ইন্ট্যারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডের কাছ থেকে ১৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকায় আরও ৫০ হাজার ট্ন গম কেনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেক প্রস্তাবে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) এর মাধ্যমে স্থানীয় দরপত্রে ৬ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে চট্টগ্রামের ইসলাম ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে। এতে ব্যয় হবে ৬২ কোটি টাকা। আর সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৬০ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল কেনা হবে মজুমদার প্রডাক্টস ও এমআরটি এগ্রো প্রডাক্টস বিডি এর কাছ থেকে। ব্যয় অনুমোদন হয় ৯৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মেসার্স এক্সেলারেট এনার্জি এলপি’র কাছ থেকে ৫৪২ কোটি টাকায় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়।
আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে (বিপিসি) বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৮২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এদিন পায়রা বন্দরের চ্যানেল ড্রেজিং, সড়ক উন্নয়ন, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের অধীন ‘ই–জিপি সিস্টেমের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ’ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।