প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে পাবনায় ‘স্বাধীনতা চত্বর’ উদ্বোধন করলেন

পাবনা প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার পাবনায় একটি স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এদিন সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নবনির্মিত স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে গণভবনের সঙ্গে সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, পাবনা প্রান্ত থেকে স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক এবং স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধরী পিন্টু সংযুক্ত ছিলেন।
গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর’ এর ওপর ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। পাবনার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক, বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, আওয়ামী লীগের উপদেস্টা পরিষদের সদস্য সাবেক দুদক কমিশনার শাহাব উদ্দিন চুপ্পু, পৌর মেয়র কামরুল হাসান মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের সহধর্মিনী নাসিমা ইসলাম, পাবনা-১ অসনের সাংসদ শামসুল হক টুকু, সদর আসনের সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা-৩ অসনের সাংসদ মোকবুল হোসেন, পাবনা-৪ আসনের সাংসদ নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা-২ অসনের সাংসদ আহমেদ ফিরোজ কবির, জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ, পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম সহ স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্যরা।

জানা যায়, অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তির স্মৃতিতে ধন্য পাবনা টাউন হল চত্বর। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, জাতির পিতার সহচর ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতা এবং মওলনা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতিধন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ থেকে ১২ বার সভা, সমাবেশ করেছেন পাবনার টাউন হল ময়দানে। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পাবনা টাউন হল প্রতিষ্ঠা হলেও সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হলে মুজিব বাহিনীর অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল মুক্তমঞ্চ নাম দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে নতুন আঙ্গিকে নির্মিত চত্বরের ও নামকরণ করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর।
আয়োজকরা জানান, স্থানীয় শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, মুক্তিযোদ্ধঅ ও জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষের উদ্যোগে প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে স্বাধীনতা চত্বরের নির্মাণকাজ চলতি বছরের মার্চ মাসে শেষ হয়। এটি নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশ ঘটাবে বলে উদ্যোক্তারা আশা করেন।

এই স্বাধীনতা চত্বরের প্রতিটি ইট পাথরের নকশায় মহান মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস বিদ্যমান। স্বাধীনতা চত্বরের প্রধান মঞ্চের দৈর্ঘ্য ৪৬ ফুট ও প্রস্ত ৪০ ফুট এবং উচ্চতা ২০ ফুট। যার দুই পাশে দুটি গ্রীণ রুম এবং টয়লেটসহ ওয়াশরুম রয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ১৮ ফুট ও প্রস্ত ২৪ ফুট। মাঠের দৈর্ঘ্য ১১৮ ফুট ও প্রস্ত ১১৭ ফুট।যার তিনদিকে দুই স্তরের বসার গ্যালারি রয়েছে। মাঠের উত্তরপূর্ব কর্ণারে প্রবেশের প্রধান ফটক ও দক্ষিণ ও পূর্ব কর্ণারে ছোট একটি গেট রয়েছে। এছাড়া সর্বোপরি পুরো মাঠে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সবুজ ঘাস। প্রসঙ্গত, মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্নেই সারা দেশের মধ্যে পাবনা প্রথম হানাদার মুক্ত হয় এবং এখানেই এ জেলার প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর পাবনামুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলস্বাধীনতা চত্বর
Comments (0)
Add Comment