গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশের এত উন্নতি হয়েছে

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে আমরা হব ২০৪১ সালের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে তরুণ সমাজ শিক্ষায়-দীক্ষায় প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ জনশক্তিতে গড়ে উঠবে।

স্মার্ট জনশক্তি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি আমরা গড়ে তুলব।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর এলাকায় এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্টেডিয়ামে বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন যাতে না হয়, সে চক্রান্ত এখনো আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ভোট দিয়ে দেশে গণতন্ত্র আছে, তা প্রমাণ করার আহ্বান জানান।

 

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এটাই ছিল শেখ হাসিনার শেষ নির্বাচনী জনসভা।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরান সড়কের পাশে এই জনসভা ঘিরে নারায়ণগঞ্জ হয়ে উঠেছিল উৎসবমুখর। জনসভা দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টা থেকেই নেতাকর্মীরা মাঠে আসতে শুরু করেন। শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু এবং প্রার্থীদের ছবিসংবলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বাদ্যির তালে তালে সমাবেশে আসতে থাকেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। দুপুর ২টার আগেই শামসুজ্জোহা স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।

এক পর্যায়ে জনতা স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে না পেরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কেই অবস্থান গ্রহণ করে। এ সময় জনতার ঢল এই সড়কের চাষাঢ়া থেকে পঞ্চবটি গিয়ে মেশে। সভামঞ্চ থেকে বারবার ঘোষণা দেওয়া হয় মাঠে জায়গা নেই, যে যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান গ্রহণ করুন।

জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায় রাখতে পারবা না।’ তো বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।

নির্বাচন ঘিরে অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়েছিল। নির্বাচন যাতে না হয় সেই চক্রান্ত এখনো আছে। যেহেতু ওরা নিজেরা নির্বাচন করে জিততে পারবে না, কাজেই দেশের মানুষকে বঞ্চিত করতে চায় ভোটের অধিকার থেকে।
 
তিনি বলেন, ‘মিলিটারি ডিক্টেটররা যখন একে একে ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, এখন আবার তারা একই কাজ করতে চায়। আমরা বলেছি নির্বাচন হবে। আজ ৪ তারিখ। ৭ তারিখের নির্বাচনে আমি আপনাদের অনুরোধ করব সবাই শান্তিপূর্ণ থাকবেন। আমি দেশের সবার কাছে অনুরোধ করব, সবাই শান্তিপূর্ণভাবে থাকবেন।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগই জনগণকে নিয়ে জনগণের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। এই ভোটের অধিকার সাংবিধানিক অধিকার, সে অধিকার আমরা সংরক্ষিত করেছি। সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, ভোট দিয়ে প্রমাণ করবেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান। ২০০৯ থেকে ২০২৩ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। আজ আমরা ২০২৪ সালে পা দিয়েছি। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের এত উন্নতি হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন মানুষ সেবা পাচ্ছে, বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর বিএনপি সেখানে কী করে, আপনারা দেখেছেন। ২৮ অক্টোবর তারা কী ভয়ংকরভাবে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেছে। ঠিক প্যালেস্টাইনে (ফিলিস্তিন) ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে, হাসপাতালের ওপর বম্বিং (বোমাবর্ষণ) করছে, ঠিক বিএনপিও সেই ইসরায়েলকে অনুসরণ করে আজ পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ, অ্যাম্বুল্যান্সে আক্রমণ করছে। ঠিক ২০১৩ সালে যেভাবে হত্যা করেছিল, ঠিক একইভাবে আবারও করেছে। ওদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। আজকে নির্বাচনে তারা আসেনি, সেটি তাদের ইচ্ছা। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া কখনোই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। এ অধিকার মানুষের অধিকার। সুতরাং ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে।’

নারায়ণগঞ্জ স্মার্ট সিটি হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দলকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান সবাইকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মার্কা নৌকা মার্কা, এই নৌকায় ভোট দিয়ে দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, এই  নৌকা আজ উন্নয়ন দিয়েছে, এই নৌকাই আগামী উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের আপনারা জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের কাছে সে আহ্বান জানাই।’

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, গাজী গোলাম দস্তগীর এমপি, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, শামীম ওসমানের সহধর্মিণী সালমা ওসমান লিপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা প্রমুখ।

শেখ হাসিনা
Comments (0)
Add Comment