মোবাইলে সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য বেঁধে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : মোবাইলে সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য বেঁধে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার : গ্রামীণফোন ফের ২০ টাকায় > প্রান্তিক মানুষের স্বার্থকে বিবেচনা করবে সরকার।

 গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় মোবাইল ফোনের রিচার্জের বিষয়ে সর্বনি¤œ মূল্য বেঁধে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে একটি কারিগরি কমিটি গঠন করবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো বর্তমানে মোবাইল রিচার্জের সর্বনিম্ন মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করেছে। যদিও এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে মোবাইল ফোন অপারেটররা ইচ্ছে মতো মোবাইল রিচার্জ মূল্য (সর্বনিম্ন) নির্ধারণ করে আসছে। এবার সেই ইচ্ছেতে কাঁচি পড়তে যাচ্ছে। মোবাইল ‘রিচার্জে সর্বনিম্ন মূল্য’ বেঁধে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

জানতে চাইলে, বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ গতকাল বুধবার একটি অনলাইন নিউজপোর্টালকে বলেন, রিচার্জে সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দেয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে। কোনো ধরনের নির্দেশনা না থাকায় সর্বনিম্ন রিচার্জের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছিল। গ্রাহক স্বার্থ বিবেচনায় এটা হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার আমরা জানতে পারি- গ্রামীণফোন সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করছে। বিষয়টি গ্রাহকদের জন্য কষ্টকর হতো। আমরা গ্রামীণফোনকে চিঠি লিখে বিষয়টিতে আপত্তির কথা জানাই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোন রিচার্জের মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের জানায়নি। অনুমোদন নেয়ার বিষয় না থাকলেও বিষয়টি জানানো যেত।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সব অপারেটরকে ডাকা হবে। অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা (ডিরেক্টিভস) তৈরি করা হবে। এছাড়া একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হবে। সেই কমিটির রিপোর্টও নির্দেশিকা প্রণয়নে গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, মোবাইল সবাই ব্যবহার করে। শুধু ধনীদের কথা চিন্তা করে রিচার্জ মূল্য নির্ধারণ করা যাবে না। সমাজের প্রান্তিক ও অন্তজ ব্যবহারকারীর কথা ভাবতে হবে। এজন্য আমরা সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য বেঁধে দেয়ার কথা ভাবছি। প্রসঙ্গত, মোবাইল রিচার্জে সর্বনিম্ন টাকার পরিমাণ আগে ছিল ১০ টাকা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন সর্বনিম্ন মোবাইল রিচার্জ ৩০ টাকা বেঁধে দিয়ে তা চালু করতে যাচ্ছিল। বিটিআরসির দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার কারণে গ্রামীণফোন পিছিয়ে এসেছে। গ্রামীণফোন তাদের গ্রাহকদের এসএমএস পাঠিয়ে, মাইজিপি অ্যাপে নোটিফিকেশন পাঠিয়ে মূল্য বাড়ানোর বিষয়টি জানায়।

গ্রামীণফোনের এই উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা এটা এখনো বাস্তবায়ন করছি না। এ বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে অলোচনা হবে। সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। এখানে উল্লেখ্য যে, সর্বনিম্ন ব্যালেন্স রিচার্জ ৩০ টাকা করার যে বিষয়টি আমরা বিবেচনা করেছিলাম সেটা চালু হচ্ছে না।

জানা গেছে, মোবাইল অপারেটররা বলছেন, তাদের আরপু (এআরপিইউ)-অ্যাভারেজ রেভিনিউ পার ইউজার ঠিক রাখতে সর্বনিম্ন রিচার্জ মূল্য

বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে যে পরিমাণ মূল্য নির্ধারণ করা আছে, সেটা না বাড়ালে আরপু ঠিক থাকবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অপারেটরের শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এই টাকার পরিমাণ ৫০ টাকা হলে সব ঠিক থাকে।

যদিও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিচার্জের সর্বনিম্ন মূল্য ১০ টাকা থাকলে সবচেয়ে ভালো হতো। গ্রামের একজন মানুষ মোবাইলে ১০ টাকা রিচার্জ করে দূর-দূরান্তে থাকা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে একটুক্ষণ হলেও কথা বলতে পারত, মিসকল দিতে পারত। সেটা বাড়ানোতে (২০ টাকা করায়) দরিদ্র, প্রান্তিক মানুষের কষ্ট বেড়েছে। সেই পরিমাণ আরো বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে।

বিটিআরসি
Comments (0)
Add Comment