ক্ষমতায় আসতে অন্ধকার গলি খুঁজছে বিএনপি

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা (বিএনপি ও সমমনারা) পরাজয়ের ভয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে এখন ক্ষমতায় আসার অন্ধকার গলি খুঁজছে। মঙ্গলবার গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইতালিসহ ২৯টি দেশে বসবাসকারী নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রেকর্ড পঞ্চম এবং টানা ৪র্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় তারা শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি ও সমমনারা) জানে জনগণ তাদের বর্জন করেছে। এ কারণেই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। তাই, তারা নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে ক্ষমতা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে। তারা এখন নির্বাচনে আলোর পথ এড়িয়ে অন্ধকারের গলির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা (বিএনপি-জামায়াত চক্র) নির্বাচন বাতিলের দাবি করছে। তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের সতর্ক থাকতে হবে।’

২০০৮ সালের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল। অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এককভাবে পেয়েছিল ২৩৩টি আসন। তখন থেকেই তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায় না। তারা বাস, লঞ্চ এবং ট্রেনে আগুন লাগিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তারা যত বেশি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে, অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জনগণ তত বেশি তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নিজেরা অফিসে তালা দেয়, আবার নিজেরাই ভাঙে। এ নিয়ে আবার গর্ববোধ কর, যে চাবি হারিয়েছে। চাবি গেল কোথায়? তালা তো তাদেরই দেওয়া ছিল। তাদের চাবি খোয়া যাবে, চাবি হারাবে এবং তারা পথও হারাবে। তারা পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের (বিএনপি-জামায়াত) একটাই দক্ষতা আছে। তা হলো বাসে আগুন দেওয়া, লঞ্চে-ট্রেনে আগুন দেওয়া, রেললাইন খুলে, রেলের পাত খুলে মানুষ হত্যা করা। মানুষ মারার ফাঁদ পাতায় তারা ওস্তাদ। তাই তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখনো চক্রান্ত শেষ হয়নি। এখনো তারা লাফালাফি করছে। বলছে নির্বাচন বাতিল করতে হবে, এই করতে হবে সেই করতে হবে। যাই হোক জনগণের ভোটে আমরা সরকারে এসেছি জনগণের কল্যাণেই কাজ করে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ তারা এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। আপনারাও নির্বাচনের জন্য এসেছেন এবং নিজ নিজ এলাকায় দেখেছেন জনগণ কিভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এ নির্বাচনে আর একটি বিষয় লক্ষণীয় নারীদের অংশগ্রহণ। সেই ১৩০ বছরের বয়োবৃদ্ধ বলেছেন, হাসিনাকে ভোট দেব। এর থেকে বড় পাওয়া মনে হয় জীবনে আর কিছু নেই, এই যে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস-এটাই সব থেকে বড় পাওয়া।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘১৫ বছর আমরা সরকারে আছি বলেই আজকে বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, বাংলাদেশের মানুষ এখন আরও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তো নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। হ্যাঁ নৌকা মার্কা দিয়েছি, সেই সঙ্গে বলেছি যারা নির্বাচন করতে চান করতে পারবেন। উন্মুক্ত করে দিয়েছি। এ কারণেই নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে।’

প্রবাসীদের প্রতি অনলাইন ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বড় অবদান রাখেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে। এখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। আপনারা যদি অনলাইনে ব্যাংকিং এর সুযোগ নিয়ে টাকাটা পাঠান, তাহলে যেটুকু পরিবারের জন্য খরচ হবে বাকিটা অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে এবং নিজেরও একটা ভরসার জায়গা থাকবে।’ এ সময় তিনি সরকারের চালু করা সর্বজনীন পেনশন স্কিম এবং প্রবাসী পেনশন স্কিম গ্রহণ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে আছি। সেখানে নারী, শিশু হত্যা হচ্ছে যা গণহত্যার শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। কিছু সহযোগিতাও পাঠানো হয়েছে এবং আরও পাঠানো হবে। তিনি এ হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় শান্তির পক্ষে। জাতির পিতার রেখে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। গত ১৫ বছরের বাংলাদেশ, বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’ বিশ্বে চলমান অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বিভিন্ন ফোরামে যেখানে কথা বলেছি সেখানেই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এই অস্ত্রের টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা এবং তাদের শিক্ষার জন্য এবং মানবকল্যাণে ব্যয় করার কথা বলেছি।’

প্রধানমন্ত্রী
Comments (0)
Add Comment