বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করছে সরকার। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় এসব পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৬ সালের মধ্যে এসব পার্ক চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এগুলো চালু হলে আগামী পাঁচ বছরে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। আইসিটি খাত থেকে আয়ের পথ তৈরি হবে। এজন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দিন দিন দৃঢ় হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভারতের সহযোগিতা পেয়েছি। বাংলাদেশের মানুষকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে ও অস্ত্র দিয়েছে। এমনকি তারা জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। করোনাকালে দেখেছি ভারত সরকার আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারত পাশে ছিল। এখনো আমাদের চলমান অনেক প্রকল্প রয়েছে। ১৯৩ মিলিয়ন ডলারে ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। এর প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ। আশা করছি ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১২টি হাইটেক পার্কই চালু হবে। লাইন অব ক্রেডিটে এই কনসেশনাল লোন দিয়েছে ভারত, তা খুব কম সুদে এবং দীর্ঘমেয়াদি। এটা হাইটেক পার্ক অথরিটির আওতায় নির্মাণ হচ্ছে।
তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অপচয় রোধ করে আইসিটি খাতে রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে, আমাদের আইসিটি টেলিকম সেক্টরে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে এবং আমাদের স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। এই তিন জায়গায় ভারতের সহযোগিতা পাব বলে প্রত্যাশা করছি। পাশাপাশি ৬টি স্থানে বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস ইমপ্লিমেন্ট ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেখানেও আমাদের ৩০ হাজার ছেলেমেয়েকে রোবটিক্স ও ডেটার মতো চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি শিক্ষায় শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারব।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দুদেশের সাইবার জগৎ নিরাপদ রাখার জন্য আমরা একটি এমওইউ করেছি। সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখন আমরা দুই দেশ একত্রিত হয়ে সাইবার ড্রিল পরিচালনা করব। এর ফলে বাংলাদেশ-ভারতসহ সারা বিশ্বে সাইবার জগতটাকে নিরাপদ রাখার
জন্য দুদেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারবে। একইভাবে ডিজিটাল ভারত বিনির্মাণে দেশটির পাশে থাকবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আমাদের ডেটা সেন্টার নির্মাণ, বেসরকারি খাতে পোস্ট, টেলিকম ও আইসিটি সেক্টরে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, গত ৫ বছরে ১ বিলিয়ন ডলার আমাদের স্টার্টআপে বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বিনিয়োগ আসছে আমেরিকা, ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে। আর কিছু আসছে জাপান থেকে। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্র। তাদের প্রায় দেড় বিলিয়ন জনগোষ্ঠী। আমাদের একটা প্রোডাক্ট যদি ভারতে বিক্রি করতে পারি… সেটা সফটওয়্যার হোক, আর হার্ডওয়্যার, কারণ বিশাল মার্কেট আমাদের ঘরের কাছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিটিসিএল, টেলিটক, পোস্ট, আইসিটি সেক্টরে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও আইটি ট্রেনিং সেন্টার খাতে সরকারিভাবে বিলিয়ন ডলারের ওপরে বিনিয়োগ করার সুযোগ আছে। বেসরকারি খাতেও বিলিয়ন ডলারের ওপরে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। বাংলাদেশ থেকে আইসিটি পণ্য রপ্তানি পাঁচ বিলিয়নে ডলারে উন্নীত করতে চাই। অর্থাৎ আগামী ৫ বছরে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। এই পাঁচ বছরে আমাদের আগামীর ৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণের যে ভিত্তি তা রচনা করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করবে। আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাব।
ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভারত পাশে থাকবে। দুদেশের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে। তরুণদের কীভাবে আরো প্রযুক্তিনির্ভর ও কর্মমুখী করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।