বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, এই প্রজন্মকে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক স্বপ্ন। তাদের দক্ষ প্রশিক্ষিত ও কর্মমুখী করাই উনার লক্ষ্য। আমাদের শিক্ষা জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কর্ম জীবনের সমন্বয় থাকে না। সেটার যেন একটা ব্রিজ আমরা করতে পারি।
শুধু ফল দিয়ে যেন আমাদের সন্তানদের জাজ না করি। তাদের মধ্যে যেন স্কিল ডেভেলপ করে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা শুধু পাঠে ন্যস্ত থাকলে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা নিতে পারবে না। মাঠে-ঘাটে কাজ করা, আর্টিকেলশিপ, ইন্টার্নশিপ করতে হবে।
এসব পরিবর্তন আমরা করতে চাই। শিক্ষার ফল মিলে দেরিতে। বিগত ৫ বছরে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দৃশ্যমান ফল মিলবে ভবিষ্যতে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যৌথ আয়োজনে সরকারের নবনিযুক্ত শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপির সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুই কোটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক ধাপ শেষ করে। এসএসসি পর্যায়ে দাখিল মিলিয়ে আসে ২০ লাখ। ১ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের শিক্ষা প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখার জন্যই কিন্তু কারিকুলামের পরিবর্তন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মূল বিষয় আমরা মেক্সিমাম নাম্বার অব শিক্ষার্থীকে মৌলিক শিক্ষা দিতে পারছি কিনা। বিশাল একটা শিক্ষার্থী কিন্তু আমার ঝরে পড়ছে। তারাই কিন্তু খাদ্য উৎপাদনের জন্য মাঠে কাজ করছে। তারাই বিদেশে রেমিট্যান্স আয় করছে। তারাই কিন্তু মিল ফ্যাক্টরিতে ওয়ার্কার হিসেবে কাজ করছে। তাদেরকে যদি বেসিক স্কিলটা আমরা দিতে পারি। মৌলিক শিক্ষাটা দিতে পারি। তারা অদক্ষ শ্রমিকের বদলে দক্ষ শ্রমিক হতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, আর ধীরে ধীরে যখন উচ্চ পর্যায়ের দিকে যাবে। আমার কতটুকু এনাটমি পড়ানো দরকার, বায়োলজিতে। মেডিক্যাল স্টুডেন্ট হলে সেই স্ট্রিমে গিয়ে সেটা আমি পড়াব। সব শিক্ষার্থীকে সবকিছু পড়ানোর তো দরকার নেই। কিন্তু আমার বর্তমান প্রসেসটা সেটাই। সবাইকে ডিফারেন্সিয়েশন ইন্টিগ্রেশন শেখানোর প্রয়োজন নাই। যারা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নির্দিষ্ট স্ট্রিমে যাবেন তাদের জন্য ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে তা কিন্তু রাখছি। সবার জন্য নির্ধারিত মানদণ্ডে বিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞান ভাষা গণিত সেটা একটা বয়সসীমা পর্যন্ত থাকতে হবে। সেভাবেই স্ট্রাকচার করা। মান কি কমে যাচ্ছে কিনা সেভাবে চিন্তা করার দরকার নেই।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমাদের মূল্যায়ন এমনভাবে হয় যে আমরা ফিল্টারিং আউট করতে থাকি। একটা পর্যায়ে পড়ে গিয়ে এমন স্ট্রাকচার যে তাদের ওই এমপিও বাতিল হয়ে যাবে। যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ শিক্ষার্থী পাস না করে। সেটার তো পরিবর্তন আনতে হবে। মূল্যায়নটা এমন শহুরে বাবা-মায়ের যে রিসোর্সটা আছে তার পক্ষে সেই মূল্যায়নের জন্য শিক্ষার্থীকে প্রস্তুত করাটা সহজ। কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে সেটা সহজ না। সেই ১ কোটি ৮০ লাখকে মনে রাখতে হবে। গণমাধ্যমে শহুরে বাবা-মায়ের অভিমতটা সবচেয়ে বেশি আসছে। কারণ তারাই সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা চায়। তারা বলতে চান আমার সন্তান জিপিএ এত হাই পেয়েছে, আমার সন্তান সবচেয়ে ভালো স্কুলে পড়ে। কিন্তু যে কারিকুলাম স্ট্রাকচার এখন আমরা করছি যে, বিদ্যালয় কোথায় আমরা পড়াব সেটা তেমন বেশি মেটার করবে না। একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত যেন শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তাক আহমেদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও সিইউজের সহসভাপতি রুবেল খান।