বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বায়ু দূষণ কমাতে ১০০ দিনের কর্মসূচি হিসেবে ঢাকার চার পাশের ৫০০ অবৈধ ইটভাঁটি উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, খোলা ট্রাকে করে ঢাকা শহরে বালু, সিমেন্ট বহন করলে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হবে। ঢেকে না রেখে নতুন ভবন নির্মাণ করলে জরিমানার পরিমাণ বাড়বে বলেও জানান পরিবেশমন্ত্রী।
বায়ু দূষণ বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, যেটা এতদিন ছিল না। যারা বায়ু দূষণের জন্য দায়ী তাদের কোনোভাবেই ছাড় নয়।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ৩০০-এর ওপরে থাকলে ক্ষতিকর। আমাদের দেশে সেটা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে। তাই বায়ু দূষণ কমানোর জন্য কি পরিকল্পনা নিচ্ছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমরা বায়ু দূষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করছি। উৎস কি সেটা না জানলে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আরেকটা বিষয় হলো বায়ুর মান যখন খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা একটা এলার্ট ইস্যু করতে চাই।
জনসাধারণকে বলতে চাই আজকে আমাদের বায়ুর যে মান আছে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য প্রচ- ঝুঁকি। সুতরাং তাদের যদি জরুরি কাজ না থাকে তাহলে যেন ঘরের বাইরে না যায়। এছাড়া ডব্লিউএইচও বলছে মাস্ক পড়তে হবে।
তিনি বলেন, বায়ু দূষণের উৎসগুলোর বিপরীতে কি ব্যবস্থা নিতে পারি। আপনারা এরইমধ্যে লক্ষ্য করেছেন ঢাকার আশপাশে যে অবৈধ ইটের ভাঁটি আছে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছি। সেটা দিয়ে পুরো সমস্যা সমাধান হবে না। ঢাকা শহরে সিমেন্ট, বালি পরিবহন হয়, নির্মাণ কাজ হচ্ছে। সেগুলো ঢেকে রাখার নিয়ম। বৃহস্পতিবার আমরা ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করব। সেখানে এসব বিষয়ে বিস্তারিত থাকবে।
অবৈধ ইটভাঁটির সংখ্যাও কতগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আদালতের হিসাবে ২ হাজারের মতো অবৈধ ইটভাঁটি রয়েছে। আমরা প্রথমে ঢাকার আশপাশে স্থায়ী চিমনিগুলো চিহ্নিত করছি। ১০০ দিনের কর্মসূচিতে দিনে গড়ে তিন থেকে চারটি ইটভাঁটি গুঁড়িয়ে দেব। অর্থাৎ ১০০ কর্মদিবসে লক্ষ্য হচ্ছে ৫০০ ইটভাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া। ঢাকার চারপাশে এক হাজার অবৈধ ইটভাঁটি রয়েছে। আসলে এ ধরনের ইটভাঁটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আরেকটা আছে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা সূচনা করছি, এই বার্তা দিতে চাচ্ছি যে, কোনো ধরনের অবৈধ ইটভাঁটি আমরা এখানে রাখতে চাচ্ছি না।
বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বা বালি, সিমেন্ট পরিবহন, গাড়ির ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কি ব্যবস্থা নেবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এজন্য আমাদের সিটি করপোরেশন আছে, তাদের সহায়তা নিতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের জরিমানাগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। গাড়ির ধোঁয়া নিয়ে বিআরটিএ আছে, যেসব গাড়ির ফিটনেস নাই তাদের বিরুদ্ধে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব না। শব্দ দূষণ বিষয়েও বিআরটিএ দেখে। আমরা শুধু পরিবেশের মানমাত্রা নির্ধারণ করি। তবে এটা কার্যকর করার দায়িত্ব শুধু আমাদের না সবার দায়িত্ব।
ফ্রান্স জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বাংলাদেশকে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলেও জানান সাবের হোসেন চৌধুরী।