বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট আর মজুতদারি রুখতে নতুন কৌশল গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। বাজার মনিটরিংয়ে যুক্ত হচ্ছে স্মার্ট ইন্টেলিজেন্স। এ প্রক্রিয়ায় পণ্যের আন্তর্জাতিক দর এবং স্থানীয় মূল্যের পাশাপাশি উৎপাদন ও মজুদের তথ্য থাকবে। কোথাও বেশি দামে পণ্য বিক্রি হলে ট্রিপল থ্রি (৩৩৩) নম্বরে ডায়াল করে অভিযোগ করতে পারবেন ভোক্তা। ওই অভিযোগের যথার্থতা পেলে চলবে অভিযান। বাজার ব্যবস্থাপনায় এ পরিবর্তন আনার বিষয়ে কৌশল গ্রহণ করতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের পাঁচ সচিব আজ জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে অংশ নিতে কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (আইসিটি) সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্মার্ট বাজার ইন্টেলিজেন্স প্রক্রিয়াটিতে এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যে, নতুন এ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাজার নজরদারিতে ভোক্তাবান্ধব হটলাইন ‘৩৩৩’ ও পণ্যের উৎপাদন, মজুদ এবং বিপণন তথ্যনির্ভর একটি ওয়েবসাইট থাকবে।
এ তথ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডারে সংরক্ষিত থাকবে। আর এটার ড্যাশবোর্ড থাকবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। যেখান থেকে তিনি সরাসরি দেশের যে কোনো প্রান্তের দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এই ড্যাশবোর্ড হচ্ছে এমন এক ধরনের সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে তথ্যের অবাধ আদানপ্রদান সম্ভব হয়। সরকার কীভাবে কাজ করছে, এসব বিষয় সরাসরি জানতে পারে জনগণ। ফলে বাজার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। উদাহরণ দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ধরা যাক কোনো আমদানিকারক চিনি আমদানি করেছেন। ওই চিনির আমদানিমূল্য, পরিশোধন ব্যয় এবং শুল্ক ধরে যে বাজারমূল্য হতে পারে তার একটি সম্ভাব্য বা যৌক্তিক মূল্য থাকবে ওয়েবসাইটে। একই সঙ্গে থাকবে পার্শ্ববর্তী দেশসহ আন্তর্জাতিক বাজারের চিনির দাম। ফলে একজন ভোক্তা সহজেই বুঝতে পারবেন ওইদিন চিনির কেজিপ্রতি ন্যায্যমূল্য কত হতে পারে। কেউ যদি তুলনামূলক বেশি দাম রাখতে চায়, তখন ‘৩৩৩’ নম্বরে ডায়াল করে ওই ভোক্তা অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাবেন।
এভাবেই বাজার ব্যবস্থায় স্মার্ট ইন্টেলিজেন্স প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিন্ডিকেট ও মজুতদারি প্রতিরোধ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রচলিত পদ্ধতিতে বাজার মনিটরিংয়ে বেশকিছু সমস্যা খুঁজে পাওয়া গেছে। সরকারের দফতরগুলো যে কোনো ধরনের অভিযান বা বাজার মনিটরিংয়ে গেলে তা সিন্ডিকেট ও মজুতদার চক্র আগেভাগেই টের পেয়ে যায়; কেউ কেউ আবার সোর্সের মাধ্যমে খবর পেয়ে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যায় বা দোকান বা গুদাম বন্ধ করে চলে যায়; কেউ কেউ আবার মোবাইল কোর্ট বা মনিটরিং কার্যক্রমের সময় দাম কমিয়ে দিলেও অভিযানের পর আবারও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে সারা দেশে জরুরি অভিযান বা বাজার মনিটরিং কার্যক্রম চালাতে গিয়েও বিপাকে পড়ে সরকারি সংস্থাগুলো। এসব সমস্যা সমাধানে এখন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিয়ে বাজার ব্যবস্থাপনায় ‘স্মার্ট ইন্টেলিজেন্স’ যুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার।