বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ফেনী নদী দিয়ে পণ্য পরিবহনে আগ্রহী ভারত।
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের পাশাপাশি পায়রা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারত এই প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলে এ সংক্রান্ত প্রটোকল সংশোধনের উদ্যোগ নেবে সরকার। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত নৌ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়া হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না জানালেও প্রস্তাবটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে ভারত। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পায়রা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের প্রস্তাব দেওয়ার পর তারা তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি; তবে বৈঠকের এজেন্ডাতে ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তারা প্রস্তাবটিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। সচিব জানান, এ বিষয়ে ভারতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া গেলে বন্দর ব্যবহারে যে প্রটোকল আছে সেটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তখন চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের পাশাপাশি পায়রা বন্দরকেও প্রটোকলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে একটি প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয় দুই দেশের মধ্যে। ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস…’ (এসিএমপি) শীর্ষক এই প্রটোকল সংশোধন করে ‘এসিএমপিপি’ করতে হবে।
এ ছাড়া পায়রা বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে চাঁদপুরের সঙ্গে নৌপথে সংযোগ স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে ভারতের। সেক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে যে ট্রানজিট চুক্তি রয়েছে- ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি)’ তাতে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীকে যুক্ত করতে হবে। পায়রা বন্দর দিয়ে পণ্য খালাসের পর ট্রানজিট সুবিধায় নৌপথে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ইন্দোবাংলা প্রটোকলে (আইবিপি) এই দুটি নদীকে যুক্ত করা প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের নৌ সচিব পর্যায়ের বৈঠকে।
ফেনী নদী দিয়ে পণ্য পরিবহনের সুযোগ চায় ভারত : খাগড়াছড়ির রামগড় ও ত্রিপুরার থেগামুখ সীমান্তে দুই দেশকে যুক্ত করেছে ফেনী নদীর ওপর মৈত্রী সেতু। ২০২১ সালে সেতুটির উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এই মৈত্রী সেতুর দূরত্ব মাত্র ৮০ কিলোমিটার। ভারতের লক্ষ্য হচ্ছে- চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য খালাসের পর স্থলপথে এই সেতু ব্যবহার করে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন। তবে এই লক্ষ্য আরও প্রসারিত করেছে দেশটি। এখন চাইছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে স্থলপথের পাশাপাশি ফেনী নদী ব্যবহার করে জলপথেও পণ্য পরিবহনের সুযোগ। এই নদী ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগর থেকে তাদের পণ্য ত্রিপুরায় নিয়ে যেতে চায় ভারত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ফেনী যেহেতু সীমান্তবর্তী পাহাড়ি নদী। ফলে এটিকে ব্যবহার করে নৌপথে পণ্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রযোজন রয়েছে।