বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : জাতীয় সংসদে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় ৭১ বিধিতে ঢাকা-১০ আসনের এমপি ফেরদৌস আহমেদের দেয়া নোটিসের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে প্রথমে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধ করার মাধ্যমে সারাদেশে একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ সৃষ্টি হবে, ভালো দৃষ্টান্ত হবে। আর যারা এই অবৈধ পণ্যগুলো তৈরি করবে, তাদের আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে সংযুক্ত করতে চাই এবং সে তালিকা বা রুলস আমরা তৈরি করছি। একইসঙ্গে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় করছে বলে জানান সাবের হোসেন চৌধুরী।
এমপি ফেরদৌস আহমেদের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশে ৩০ হাজার মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য তৈরি করছি আমরা। আর ঢাকায় প্রতিদিন তৈরি করছি প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। যার ১০ শতাংশ এই প্লস্টিক বর্জ্য। আমরা আগামী ২ বছরে ৯০ শতাংশ প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর পরিকল্পনা করেছি। আমরা সিঙ্গেল ব্যবহার্য প্লাস্টিকের তালিকা করব। এটার উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। সেই সঙ্গে আমরা আমাদের আচরণ পরিবর্তন করতে চাই। আর সিঙ্গেল ব্যবহার্য প্লাস্টিক এতটাই সহজলভ্য, এটা সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে, আমরা সব সময় নিয়ে নিচ্ছি, যদিও এর বিকল্প আছে। এমপি ফেরদৌস আহমেদ অপর এক প্রশ্নে বলেন, ঢাকা শহরে যে কোনো স্থানে প্লাস্টিক বর্জ্য যত্রতত্র পোড়ানোর কারণে টক্সিন, ডায়াক্সিন, সালফার-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ইত্যাদি গ্যাস তৈরি হয়- যা মারণব্যাধি ক্যান্সারের কারণ। আমি শঙ্কিত- প্লাস্টিক বর্জ্য হাজারীবাগের খাল, আমার এলাকার বিভিন্ন স্কুলের মাঠে রাখা হয় ও পুড়িয়ে ফেলা হয়, এটা রোধে কী ভাবনা মন্ত্রীর?
এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ধরনের প্লাস্টিক পোড়ানোর অধিকার কাউকে দেয়া হয়নি। কিছুদিন আগে আমি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের খুব পাশের একটি জায়গায় সেটা পোড়ানো হয় তা সচিবালয় থেকে আমরা লক্ষ্য করেছিলাম।
তিনি বলেন, এসব বর্জ্য পোড়ানোর বিষয়ে অনেকগুলো আইন আছে। কিন্তু আমরা তা সঠিকভাবে কার্যকর করতে পারছি না। অবশ্যই এটা আমাদের দেখা দরকার, কেননা বর্তমান সরকার পাবলিক হেল্থকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা সাধারণত স্বাস্থ্য বলতে বুঝি হাসপাতাল কয়টা আছে, কটা মেশিন আছে এসব, কজন ডাক্তার নার্স এসব। কিন্তু বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে ঢাকা শীর্ষে থাকে, সেটার কারণ হচ্ছে পলিথিনের দূষণ ও পোড়ানো। এ সময় তিনি সংসদ সদস্যদের নিজ নির্বাচনী এলাকায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার, পোড়ানো সর্বোপরি বায়ুদূষণের হাত থেকে নিজ শহরকে রক্ষা করার আহ্বান জানান।
এমপি হাবিবুর রহমানের ৭১ বিধিতে মনোযোগ আকর্ষণবিষয়ক নোটিসের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সব চেয়ে বড় হাকালুকি হাওরে গাছ লাগানোর কর্মসূচি নেয়া হবে। শুধু গাছ লাগানোর প্রোগ্রাম নয়, আমাদের দেশে যেসব হাওর এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেসব জলাভূমি আছে সেটাকে চিহ্নিত করতে একটা ডিজিটাল ম্যাপিং করার চেষ্টা করছি। এই আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ম্যাপিংয়ের মাধমে এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে রক্ষা করব।