বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : শেখ হাসিনার ইউরোপ জয় : মিউনিখ সফর > সরকার প্রধানদের অভিনন্দনে সিক্ত > শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সবার আগ্রহ > বক্তব্যে যুদ্ধবিরোধী বার্তা প্রসংশিত
তিন দিনের মিউনিখ শান্তি সম্মেলন শেষে গত সোমবার দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরষ্কুশ বিজয় অর্জনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমাদের নানা মতপার্থক্য সত্ত্বেও সরকার গঠনের পর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের উষ্ণ অভিনন্দন পান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনের সাইডলাইনে পৃথক বৈঠকে রাষ্ট্র, সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বর্তমান বিশ্বের নেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের শান্তির বার্তাও সব মহলে প্রসংশিত হয়। দৃঢ়তার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান, গাজায় নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধের জন্য যে পরিমাণ টাকা দিয়ে অস্ত্র কেনা হয়, এর বদলে জলবায়ু তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়ে বিশ্ব নেতাদের মনোযোগ কেড়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। শুধু সম্মেলন নয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ কি চায়, তা বলিষ্ঠ কণ্ঠে তুলে ধরেছেন তিনি। কূটনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ জার্মানির মিউনিখের এই নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নেয়া, ছয় প্রস্তাব রাখা, সাইডলাইনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক- শেখ হাসিনার ইউরোপ জয় হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক বিষয়ের বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, জলবায়ু অর্থায়নবিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য দেয়ার পাশাপাশি সম্মেলনের সাইডলাইনে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। সরকারপ্রধানের এ সফরকালে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন বিষয়কমন্ত্রী লর্ড ডেভিড ক্যামেরন, জার্মান ফেডারেল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়নমন্ত্রী সভেনজা শুলজে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক পেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস, উইমেন পলিটিক্যাল লিডারের (ডব্লিউপিএল) প্রেসিডেন্ট সিলভানা কোচ-মেহরিন, সিনিয়র ম্যানেজিং
ডিরেক্টর, ডেভেলপমেন্ট পলিসি অ্যান্ড পার্টনারশিপ অ্যাঙ্গেল ভ্যান টর্টসেনবার্গ, মেটার গেøাবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. স্যার নিক ক্লেগ।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনার মিউনিখ সম্মেলনটি বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সম্মেলনের মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। মিউনিখ যাওয়ার পর মূল সম্মেলন ও সম্মেলনের বাইরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এ ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার ছয়টি প্রস্তাবই মূল আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। যুদ্ধ এবং জলবায়ু তহবিলে সহায়তা বাড়ানোর প্রস্তাবও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম দফাতে রয়েছে, সংবেদনহীন অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করা এবং তার পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয় করা। প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো যে অঙ্গীকার করেছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দুই বছরে বার্ষিক ১ হাজার কোটি ডলারের বা ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রতিশ্রæতি পালন করতে হবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের অবশ্যই ২০২৫ পরবর্তী নতুন জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্যমাত্রার ব্যাপারে একমত হতে হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিশ্বকে যুদ্ধ ও সংঘাত, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিক বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড থেকে সরে আসতে হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট দুর্যোগ প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য যে অর্থায়ন করা হয় তাতে প্রচণ্ড ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। অভিযোজন অর্থায়নের বর্তমান হারকে অন্তত দ্বিগুণ করতে হবে। চতুর্থ প্রস্তাবে রয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিদ্যমান আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল পাওয়ার পথ সুগম করার দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমস্যা সমাধান করা। পঞ্চম পরামর্শে রয়েছে- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক অর্থায়নে সংস্কার করা। বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ঋণের বোঝা ব্যবস্থাপনায় অনুদান ও ঋণের ছাড়ে সুযোগ বাড়ানো। শেখ হাসিনার সবশেষ পরামর্শে রয়েছে, জলবায়ু কর্মের জন্য ব্যক্তিগত পুঁজি প্রবাহকে একত্রিত করতে সরকারগুলোকে সঠিক পরিকল্পনা ও নীতিগ্রহণ এবং উপকরণে বিনিয়োগের পরামর্শ দেয়া।
বাংলাদেশের দৃঢ় নেতৃত্ব আবারো দেখেছে বিশ্ব মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার এটি প্রথম বিদেশ সফর। অনেকেই ভেবেছিলেন প্রধানমন্ত্রী হয়তো ভারত কিংবা চীন দিয়ে রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করবেন। কিন্তু তিনি ইউরোপ দিয়ে সফর শুরু করেছেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৫০টি দেশের রাষ্ট্র নায়করা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জোরালো অবস্থান ছিল যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে। সম্মেলন ছাড়াও সাইডলাইনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কথা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোর যেসব সংবাদ আমরা দেখেছি, তাতে প্রতিটি বৈঠকেই সাফল্য দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভলোদিমির জেলেনেস্কির সঙ্গে বৈঠকটিও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, যুদ্ধ শুধু দুটি দেশের ক্ষতি নয়, পুরো বিশ্বের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে একটা মতপার্থক্য ছিল। সুষ্ঠু নির্বাচনের পর তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মধ্য দিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন ভিত্তি পেল। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এই নীতিকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
মিউনিখ সফরে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের জন্য দুইপক্ষকেই পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিশ্লেষকদের মতে, শান্তি সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের কাছে ছয়টি পরামর্শ বা দফা প্রস্তাব তুলে ধরার মাধ্যমে শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের নজর কেড়েছেন। যখন পরাশক্তিগুলো অস্ত্রের সরবরাহের মাধ্যমে চলমান যুদ্ধগুলোকে উসকে দিচ্ছে- সেখানে যুদ্ধের পরিবর্তে জলবায়ু তহবিলে অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানানোর কারণে শেখ হাসিনা প্রভাবশালী দেশগুলোর প্রশংসা পেয়েছেন। রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সত্ত্বেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শেখ হাসিনার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে শেখ হাসিনা যুদ্ধে অংশ নেয়া সবপক্ষকেই অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যুদ্ধ-সংঘাতময় বিশ্বে শেখ হাসিনার এমন সাহসী উচ্চারণ অত্যন্ত প্রশংসার।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক মুন্সী ফয়েজ আহমদ ভোরের কাগজকে বলেন, ইউরোপ সফরই একটি বড় প্রাপ্তি। প্রধানমন্ত্রী যে সম্মানের সঙ্গে কাজ করেছেন, এর একটি বড় স্বীকৃতি ইউরোপ সফর। সম্মেলনে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে- সেখানে বাংলাদেশ কি চায়, তা বলিষ্ঠ কণ্ঠে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যুদ্ধবিরতি চান। যুদ্ধে শুধু দুই পক্ষের নয়; সারা বিশ্বের ক্ষতি হচ্ছে- এটি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সব যুদ্ধ বন্ধ করে সেই অর্থ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের তহবিল সংগ্রহ করার কথা বলেছেন তিনি। গাজায় জেনোসাইড নিয়ে কথা বলেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যু কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলা এবং সমর্থন আদায়ের চেষ্টা অনেক বড় প্রাপ্তি। তিনি বলেন, এছাড়া কূটনৈতিক অঙ্গনে বড় প্রাপ্তি ইউরোপ দিয়ে নতুন সরকারের সফর শুরু। বিশ্ব বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়। গেøাবাল সাউথের বড় ভয়েস বঙ্গবন্ধুকন্যা। এসব আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেই তারা শুধু সম্মানিত করেনি; বরং নিজেদের ভয়েস জোরালো করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাশে চায়। এটি গুরুত্বপূর্ণ।
স্বস্তিতে সরকার, ফুরফুরে আ.লীগ : অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের মাধ্যমে সম্মেলন কূটনীতিকে কাজে লাগাতে পারার বিষয়টি নতুন সরকারকে অনেক স্বস্তি দিয়েছে। আর এজন্য ফুরফুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মিউনিখে শেখ হাসিনার সাহসী কূটনীতিই আমরা দেখলাম- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে একটা সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে সমালোচনামুখর ছিল বহির্বিশ্বের একটা অংশ। তারপরও আজকে এই সংকটে সিকিউরিটির মতো সেনসেটিভ ইস্যুতে আমন্ত্রণ জানানো এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে অংশ নেয়া- এটা বাংলাদেশের গুরুত্বকেই তুলে ধরে। যেখানে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধের বিরুদ্ধে, শান্তির পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। আগে কোনো নেতা এই দুঃসাহস দেখাতে পারেননি। ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’- এখানে শেখ হাসিনার সাহসী কূটনীতিই আমরা দেখলাম।
এদিকে সম্মেলনের বাইরে সাইডলাইন বৈঠকের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রকল্পে ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকার পাশাপাশি বাজেট সহায়তায় ৫ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকার প্রতিশ্রæতি পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিউনিখ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ব্যাপক আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনা সম্মেলনের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। এছাড়া সাইডলাইনের বৈঠকের ফলে বিশ্ব ব্যাংক চলমান ৫৬টি প্রকল্পে ১৬শ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা (ডলার ১১০ টাকা হিসেবে) এবং ৫০ কোটি ৯০ লাখ ডলার বা ৫ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা বাজেট সহায়তার প্রতিশ্রæতি ছাড়াও স¤প্রতি রোহিঙ্গা ও দরিদ্র মানুষের জন্য ৭০ কোটি ডলার বা ৭ হাজার ৭শ কোটি টাকার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর গোটা দেশের জন্য সম্মানজনক মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ভোরের কাগজকে বলেন, মিউনিখ সম্মেলনে ইউরোপের সবগুলো দেশই আমন্ত্রণ পায়নি; সেখানে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো, গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তার ভাষণ দেয়া, বিশ্ব নেতাদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরার মাধ্যমে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রতি পশ্চিমাদের আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। গাজায় নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদ করেছেন। যুদ্ধের জন্য যে পরিমাণ টাকা দিয়ে অস্ত্র কেনা হয়, এর বদলে জলবায়ু তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। ভলোদিমির জেলেনেস্কির সঙ্গে বৈঠকেও যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্ব নেতারা বিশ্বাস করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাতেই গণতন্ত্র নিরাপদ। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ জিরো টলারেন্স। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে পিতার যোগ্য উত্তরসূরি কন্যা শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব আবারো শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতাসহ এসব বিষয় বুঝতে পেরেছে। রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় শেখ হাসিনা নিজেকে বিশ্ব নেতায় পরিণত করেছেন। এজন্যই বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানান, গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনার কথা শুনেন এবং বাংলাদেশকে মর্যাদার চোখে দেখেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, তার ব্যক্তিত্ব, ক্যারিশম্যাটিক রাজনীতি, পারসোনাল ডিপ্লোমেসি দিয়ে মানুষের জন্য কথা বলেন, বিশ্ববাসীর জন্য কথা বলেন। সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলার দৃঢ় এবং সৎ সাহস শেখ হাসিনার রয়েছে বলেই বিশ্ব নেতারা তাকে পছন্দ করেন, গুরুত্ব দেন, তার কথা শুনেন। মিউনিখ সফরেও বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রশংসা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির আলোকেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান, গাজায় নারী-শিশু হত্যার প্রতিবাদ করতে পেরেছেন তিনি।