নিউইয়র্ক (ইউএনএ): মূলধারার রাজনীতিক বাংলাদেশী-আমেরিকান শেখ শাহজাহান নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস কমিউনিটি বোর্ড-১ এর ইমিগ্রেশন বিষয়ক সাব কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ায় বৃহত্তর ঢাকাবাসী তাকে সংবর্ধিত করেছে। এ উপলক্ষ্যে রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের মামা’স পার্টি হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আজহারুল হক মিলান এবং দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট রাজনীতিক মোহাম্মদ বাসেত রহমান। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর আয়োজকদের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত শেখ শাজাহান-কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক-লেখক সাঈদ তারেক, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম ও সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন, মোশাররফ হোসেন সবুজ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট আমীন মেহেদী, সৈয়দ আকিকুর রহমান ফারুক, আরিফ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন।
সভায় গিয়াস আহমেদ বলেন, প্রবাসে বাংলাদেশী কমিউনিটির কল্যাণের জন্য আমাদেরকে মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই। সেই সাথে সকল নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ জরুরী। কেননা, ভোট প্রয়োগের মধ্য দিয়েই প্রমানিত হয় কোন এলাকায় কোন কমিউনিটি কত শক্তিশালী। আর কমিউনিটি বোর্ড থেকে শুরু করে সিটি, ষ্টেট, ফেডারেল সরকার/প্রাশাসন সংশ্লিস্ট এলাকার ভালো-মন্দ নির্ধারণ করে থাকে। আর তাই শেখ শাহজাহানের মতো যদি আমরা বিভিন্ন কমিউনিটি বোর্ডেও দায়িত্ব নিতে পারি তবে সহজেই আমরা আমাদের কমিটির জন্য ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবো। তিনি বলেন, আমেরিকায় মুসলিম কমিউনিটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এবিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, কমিউনিটির বিভেদ-বিভক্তি আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী-আমেরিকান মোর্শেদ আলম যখন প্রথম নির্বাচন কলেন তখন আমরা দলমত বিবেচনা না করে তাকে সংবর্ধিত করেছি। তাতে আমাদের কালো ক্ষতি হয়নি, বরং লাভ হয়েছে। আমাদের মধ্যে ভিন্ন মত থাকতে পারে, কিন্তু কমিউনিটির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সভায় বক্তারা প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে শেখ শাহজাহানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে মূলধারার রাজনীতিতে বেশী বেশী করে সম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, আমেরিকান রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থেকে তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটির জন্য কাজ করেই তিনি আজকের পর্যায়ে এসেছেন। আজ তিনি কমিউনিটি বোর্ডের একটি কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন। তার এই মনোনয়ন অন্যদেরকেও উৎসাহিত করবে। বক্তারা বলেন, আমেরিকাতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশী-আমেরিকান নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। কমিউনিটির স্বার্থে প্রতিহিংসা ত্যাগের পাশাপাশি যোগ্য ব্যক্তিকে সমর্থন ও সহযোগিতা করতে হবে। বক্তারা কমিউনিটির পাশাপাশি দেশের জন্যও কাজ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংবর্ধিত শেখ শাহজাহান তার বক্তব্যে বলেন, আজকের সংবর্ধনা আমার জন্য নয়, এই সম্মান পুরো কমিউনিটির সম্মান। তবে আজকের এই সম্মান আমাকে কমিউনিটিতে কাজ করতে উৎসাহ যোগাবে। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের বাংলাদেশী-আমেরিকানের সংখ্যা কম নয়। অথচ নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে একমাত্র শানাহা হানিফ ছাড়া আমাদের আর কোন প্রতিনিধি নেই। এটা দু:খজনক। অথচ বাংলাদেশীদের সমর্থন নিয়ে অনেকেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। বিষয়টি আমাদের ভাবতে হবে।