কুড়িগ্রামে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে খুশি চরাঞ্চলবাসী

আল এনায়েত করিম রনি, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ‘রাজীবপুরের চরে চরে,থানা এখন ঘরে ঘরে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে থানাধীন কোদাল কাটি ইউনিয়নে জন সাধারণের দ্বোর গোড়ায় আইনি সেবা পৌঁছে দিতে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ।যোগাযোগ বিছিন্ন নদী কোদালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে প্রতি সপ্তাহের শনিবার করে দিনভর থানার কার্যক্রম চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাজীবপুর থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান। গত দু সপ্তাহ ধরে আইনি সেবা দিতে দিচ্ছেন পুলিশ। ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে বসে এমন আইনি সেবা পেয়ে খুশি এখানকার সকল পেশা শ্রেনির মানুষ।

জানা গেছে, রাজীবপুর উপজেলাটি কুড়িগ্রাম জেলার একটি বিছিন্ন উপজেলা। উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে বিধস্ত একটি ইউনিয়নের নাম কোদালকাঠি। ১৯৭৩ সালে স্থাপিত ইউনিয়নটিতে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষের বসবাস। ভোটার সংখ্যা ১৫হাজার ৩০০জন।এখানে রয়েছে ২৯টি গ্রাম। ব্রহ্মপুত্র নদের জেগে উঠা চরে এই গ্রামগুলোর অবস্থান।যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষজনের ভোগান্তির সীমা নেই।পুলিশী আইনি সেবা পেতে বন্যায় নৌকা ও খড়া মৌসুমে প্রায় ১৫ কিঃ মিঃ পায়ে হেঁটে আসতে হয় রাজীবপুর থানায়। অনেকে এত দূর্গম পথ পারি দিয়ে থানায় আসেন না। ফলে ছোট বড় অনাকাঙ্খিত ঘটনা গুলো প্রায় বৃহত্তর আকারে রুপ নেয়। সংঘর্ষ সংঘাতে প্রায়শই প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।এসবেী উত্তোরণে ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করেছে
রাজীবপুর থানা পুলিশ। ঘরে বসে বিবাধ মিমাংসা নিরসনে পুলিশের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সহজে আইনি সেবা পাওয়ার জন্য অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্রকে স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, আমার ভিটেমাটি নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ১০ বছর।এর পর গত ৪ বছর হলো চর জাগে।সেখানে আমার ৬ শতক জমি দখল করে প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাই। গরীব মানুষ মামলা মোকদ্দমা চালানোর সামর্থ নাই।অন্যের জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি।এখান থানা কাছে করার খবর পেয়ে বিনা টাকায় একটি অভিযোগ দেই।পরে থানার ওসি বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করে দেয়। এখন জমি পেয়ে আমি খুবই খুশি।

স্থানীয় শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে কোদালকাটির মত এমন প্রত্যন্ত চরে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র পেয়ে আমরা অনেক খুশি। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। শুধু কোদাল কাটিতে নয় সারা দেশের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে এমন আইনি সেবা কেন্দ্র চালু হলে মানুষজন উপকৃত হবে।
কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু বলেন,আমার ইউনিয়নের মানুষজনের সুবিধার্থে অস্থায়ী পুলিশী সেবা কেন্দ্র চালু করায় আমরা অনেক খুশি।পুলিশের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক।

রাজীবপুর থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, জেলার সবচেয়ে অবহেলিত ও দারিদ্র্য পীড়িত এ অঞ্চলের মানুষজন খুবই সহজ সরল।কোন দূর্ঘটনা হলে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়ায় এ ইউনিয়নের মানুষ থানায় আসতে চায় না।

তাই সব কিছু বিবেচনা করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে একদিন এখানে আইনি সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করি।কেননা পুলিশ জনতার।তাদের আইনি সেবা দিতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুুত।আমরা জনস্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

কুড়িগ্রাম
Comments (0)
Add Comment