নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টায় মালিকপক্ষ

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছাকাছি রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ। জিম্মি হওয়া জাহাজটি ঘিরে ইইউর হেলিকপ্টারকে চক্কর দিতে দেখা গেছে ‘অপারেশন আটলান্টা’র প্রকাশ করা ভিডিওতে। তবে গতকাল শুক্রবার রাতে জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘কোনো ধরনের অভিযানকে আমরা সমর্থন করছি না। নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জিম্মিদশার অবসান চাই। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি নাবিকদের সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।’

জানা যায়, চট্টগ্রামের জাহাজটি তিন দিন ধরে সোমালিয়ার গোদবজিরান উপকূল থেকে মাত্র দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছে। ইইউকে অভিযান থেকে বিরত রাখতে জিম্মি নাবিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে দস্যুরা। ইইউ নেভাল ফোর্সের চাপে নাবিকদের এখন ২৪ ঘণ্টাই জাহাজের ব্রিজে অবস্থান করতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ভিএইচএফ ব্যবহার করে নৌবাহিনীকে অনুরোধও জানাতে হচ্ছে যেন কাছে না আসে। তবে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও সরকার নাবিকদের নিরাপত্তাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আগেও নেভাল ফোর্স জিম্মি জাহাজটিকে উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও তাতে সম্মতি দেয়নি সরকার ও জাহাজের মালিকপক্ষ।

যে সুবিধা দেবে যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি: উত্তর পশ্চিম ভারত মহাসাগরের নিরাপত্তায় ইউরোপিয়ান নৌবাহিনী পরিচালিত কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত নাম ‘ইইউ ন্যাভ ফর আটলান্টা’। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বাহিনীটি এমভি আব্দুল্লাহর কাছে তাদের অবস্থানের তিনটি ছবি ও একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ইইউ নেভাল ফোর্সের সদস্যদের নজরদারির পাশাপাশি ওই আকাশসীমায় তাদের হেলিকপ্টারও টহল দিতে দেখা যায় ভিডিওতে।

এমন অবস্থান জিম্মি মুক্তিতে প্রভাব রাখতে পারে বলে জানান মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনাম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রথমত এত কাছে ইউরোপিয়ান বাহিনীর মতো শক্তিশালী সামরিক উপস্থিতি দস্যুদের ওপর একটা চাপ তৈরি করবে, যা সমঝোতার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে। দ্বিতীয়ত, পূর্ব আফ্রিকার ওই উপকূল থেকে নতুন কোনো দস্যুদল সাগরে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে, দস্যুদের তৎপরতা কমে আসবে।

স্বজনরা এখনো উৎকণ্ঠায়: বুধবার সেহরির পর এমভি আব্দুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ফোন পান শাহনুর বেগম। তিনি জানান, কতটা দুঃসহ দিন পার করছেন তার ছেলেসহ অন্য নাবিকরা। ঠিকমতো পানি দেয় না, খাবার দেয় না দস্যুরা।

জিম্মি থাকা ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খানের সঙ্গে তার বড় ভাই ওমর ফারুকের সর্বশেষ কথা হয় এ সপ্তাহের শুরুতে। তিনি জানান, জলদস্যুরা প্রতিদিন খাবার নষ্ট করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বড় সংকটে পড়তে হবে তাদের।

কেএসআরএম (কবির) গ্রুপের কয়লাবোঝাই জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে। এরপর থেকে নাবিকদের স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন।

সোমালিয়া জলদস্যু
Comments (0)
Add Comment