বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রার্থীর মালিকানাধীন স্থানে ভোট কেন্দ্র নয়। প্রার্থীর অধীনস্থকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা না করার নির্দেশ। ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ। দ্বিতীয় ধাপের তফসিল আগামী সপ্তাহে
উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র স্থাপনে প্রার্থীর মালিকানাধীন কোনো স্থানে ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া প্রার্থীর অধীনে চাকরিরত বা অতীতে অধীনস্থ ছিলেন, এমন কাউকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। এদিকে আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের তফসিল আগামী সোমবার ঘোষণা করা হতে পারে। ১২১টির মতো উপজেলায় এ ধাপে ভোট হতে পারে। ইসি সূত্রগুলো জানিয়েছে, সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ৩০তম কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের তফসিল, দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র সভার আলোচ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সোমবারের কমিশন বৈঠক থেকে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে। মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোট গ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
প্রার্থীর মালিকানাধীন স্থানে ভোট কেন্দ্র নয় : উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রার্থীর মালিকানাধীন কোনো স্থানে ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে : (ক) কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখের অন্যূন ১৫ (পনেরো) দিন পূর্বে উক্ত চূড়ান্ত তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে এবং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে যে সব এলাকার ভোটাররা ভোটদান করবেন সে সব এলাকার নামও চূড়ান্ত তালিকায় উল্লেখ করতে হবে; তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও, বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন যে কোনো ভোট কেন্দ্র পরিবর্তন করতে পারবে; (খ) রিটার্নিং অফিসার প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোট কেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কেন্দ্রের ব্যবস্থা করবেন। (গ) সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় এরূপ স্থানকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে না। (ঘ) পুরুষ ও মহিলা ভোটাররা যাতে পৃথকভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন তদুদ্দেশ্যে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কক্ষের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্থান রাখতে হবে। (ঙ) কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো স্থানে কোনো ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না। (চ) প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের পর কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভোট কেন্দ্র স্থাপিত হয়ে থাকলে কমিশন তা পরিবর্তন করতে পারবে। (ছ) প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোপন কক্ষ থাকবে।
প্রার্থীর অধীনস্থকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নয় : উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে প্রার্থীর অধীনে চাকরিরত বা অতীতে অধীনস্থ ছিলেন, এমন কাউকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। গতকাল সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভোট কেন্দ্রে দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান নির্বাচন প্রক্রিয়ার সফল ও সার্থক প্রতিফলন ঘটে। ফলে ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এ লক্ষ্যে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব প্রদান করাই সমীচীন বলে নির্বাচন কমিশন মনে করে। নির্বাচন কমিশন আশা করে যে, যেহেতু দেশের উপজেলাসমূহ ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা সীমিত, সেহেতু সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রশাসনিক ক্ষমতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, নিরপেক্ষতার প্রতি লক্ষ্য রেখে এরূপ দায়িত্ববান কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ করার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এ ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অধীন বা পক্ষে চাকরিতে নিয়োজিত থাকেন বা কোনো সময় নিয়োজিত ছিলেন, তবে তাকে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসার নিয়োগ করা যাবে না। এ ছাড়া অন্য কোনো কর্মকর্তা সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপিত হলে তাও বিবেচনা করতে হবে।
ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ : উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিস খোলা রেখে কাজ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে অফিস খোলা রেখে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
ভোটের একাধিক প্রার্থীর মধ্যে লটারির নির্দেশ : আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একই পদে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে তাদের মধ্যে লটারি করে বিজয়ী নির্ধারণে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।