জরুরি দায়িত্ব বা অপারেশনাল কার্যক্রম চলাকালে জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কর্তৃপক্ষ। ফলে এখন থেকে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনীর যানবাহন জরুরি প্রয়োজনে টানেলের ভেতর টোল ছাড়া চলাচল করতে পারবে।
এ ছাড়া টানেলের ভেতর অতিরিক্ত গতির যানবাহন জব্দ ও সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ নগরীর পতেঙ্গায় টানেল সাইট অফিসে ‘নিরাপত্তা ও সুরক্ষা’ বিষয়ক এক সভায় এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বৈঠকে নৌবাহিনী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি), আনসার ও টানেলের (ওএন্ডএম) অপারেটরদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৩ সালের ২ অক্টোবর থেকে টানেল উদ্বোধনের পর নৌবাহিনীকে টানেলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং নগর পুলিশ দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে টানেল খোলার আগে সিএমপি এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেলের ভেতর উদ্ধার অভিযানে ব্যবহৃত তাদের যানবাহনকে টোল ছাড়া চলাচলের অনুমোদন দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এমনকি সিএমপি প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছিল। গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর প্রস্তুতি সভাতেও সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনের কাছে টোলমুক্ত চলাচলের কথা তুলে ধরেছিলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। কিন্তু এতদিন টানেলে প্রবেশ করতে অনান্য গাড়ির মতোই টোল পরিশোধ করে আসছিল পতেঙ্গা ও কর্ণফুলী থানা পুলিশ।
জরুরি যানবাহনের জন্য টোলমুক্ত চলাচলের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় অপারেশনাল কার্যক্রম চলাকালীন পুলিশ, নৌবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিসের জন্য টোল-ফ্রি অ্যাক্সেসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি তাদের।
আমরা টানেলের ভেতর স্বয়ংক্রিয় স্পিডগান ক্যামেরা বসাতে সময় নিচ্ছি। অতিরিক্ত গতির কারণে টানেলের ভেতর বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। টানেলের ডেকোরেশন প্যানেলের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, অতিরিক্ত গতির গাড়িগুলোকে ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে আটকের পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টানেলের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এক মাসে দুই বা তিন দিন অতিরিক্ত গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব। নৌবাহিনী, ট্রাফিক পুলিশ এবং আমাদের কর্মীরা এই অভিযানে নিয়োজিত থাকবে।
বৈঠকে থাকা সিএমপির একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ট্রাফিক পুলিশ মাসে তিন থেকে চার দিন টানেলের ভেতরে স্পিডগান নিয়ে আকস্মিক অভিযান চালাবে। বহির্গমন পয়েন্টে অতিরিক্ত গতির যানবাহন আটক করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।