বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে মানুষ অন্য চোখে দেখত। বাংলাদেশ মানে গরিব দেশ, বাংলাদেশ মানুষের কাছে হাত পেতে চলে। একটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করত, যেটা আমার খুব কষ্ট লাগত। কারণ আমরা তো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছি। আমরা বিজয়ী নাগরিক। আমরা বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে চলব। কেন আমাদের মাথা নিচু করে অন্যের কাছে হাত পেতে চলতে হবে?
শুক্রবার বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দাড়িয়াকুল সমবায় সমিতির উপদেষ্টা হিসাবে সমিতির উপকারভোগীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় এবং ব্যক্তিগত অর্থায়নে কৃষি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের নেওয়া কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কেউ গরিব থাকবে না। তিনি ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এবং দেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য সমগ্র বাংলাদেশে সমবায় সমিতি গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রতিটি এলাকায় সমবায় সমিতি গঠন করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবাইকে আহ্বান করছি এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যখন কিছু বলি, আগে নিজের তা করতে হয়। গণভবনে আমরা সবকিছুই চাষ করা শুরু করেছি। টুঙ্গিপাড়ায় আমাদের যত অনাবাদি জমি আছে তা আমরা চাষের আওতায় নিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে অনেক জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় যত জমি অনাবাদি থাকবে সবই আমি চাষের আওতায় নিয়ে আসতে চাই। সেসব অনাবাদি জমি সমবায়ের মাধ্যমে একসঙ্গে চাষ হবে। জমির মালিক অংশ পাবে, যারা কাজ করবে শ্রম দেবে সেই কিষান-কিষানী একটি অংশ পাবে, কিছু অংশ সমবায় সমিতির কাছে রাখা হবে। সেটা দিয়ে কৃষি উপকরণ কেনা হবে। আশা করি বাংলাদেশের মানুষ আর গরিব থাকবে না। তারা মাথা উঁচু করে চলতে পারবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আমরা অনেকগুলো ব্যবস্থা নিয়েছি। আরেকটি বিষয় হলো কোনো মানুষ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। সবার একটা ঠিকানা হবে। বাসস্থান হলে তার একটা কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেসব নেতা আছে তারাও এ ব্যাপারে আন্তরিক হলে প্রত্যেকটি এলাকায় সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও মানুষকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের আওতায় আনা সম্ভব। আমাদের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা যারা নিজেরা কাজ করে খান তাদের জন্য হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন স্কিম। যারা একটু অর্থশালী তারা প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে রাখতে পারবেন। ২০, ৩০, ৪০ বছর পর তারা এই পেনশনের টাকা তুলতে পারবেন। প্রবাসীদের জন্যও স্কিম আছে। যখন আর কাজ থাকবে না, কেউ দেখার থাকবে না, তখন পেনশন হিসাবে ওই টাকা তুলে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। একেবারে নিুবিত্ত যারা তারা ৫শ টাকা দিলে তাকে আমি সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫শ দেব। তাহলে তার এক হাজার টাকা জমা হবে। মেয়াদ শেষে সেখান থেকে প্রতি মাসে টাকা তুলতে পারবে। বয়স হয়ে গেলে কারও মুখাপেক্ষী যাতে না হতে হয় তার জন্য এ ব্যবস্থা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণের ব্যবস্থা নিয়েছি এবং সেটা আরও শক্তিশালী হবে। আমিই প্রথম মোবাইল ফোন উন্মুক্ত করে দিয়েছি সবার হাতে। স্কুলে-স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব, কম্পিউটার সেন্টার ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। দুই মাইলের মধ্যে একটি করে প্রাইমারি স্কুল নির্মাণ করে দিয়েছি। শিক্ষকদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছি।