বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : লোকসানের হিসাব মাথায় রেখে পঞ্চমবারের মতো আবারও চালু হচ্ছে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এবার এই ট্রেন চালানো হবে পদ্মা সেতু দিয়ে। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে বিকেল চারটায় ছেড়ে রাত সোয়া দুইটায় ঢাকায় পৌঁছাবে। এই ট্রেনটি চালু হবে আগামী ১০ জুন থেকে।
রাজশাহী বিভাগ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পরিবহন বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। এ সময় রাজশাহী সদরের এমপি ও রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, নাটোরের এমপি আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদত আলী, রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মো. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারসহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে জানানো হয়, ছয়টি লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে আম পরিবহন করা যাবে ২৮ দশমিক ৮৩ টন। তবে এবার ট্রেন যাবে পদ্মা সেতু হয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এই ট্রেন। যাত্রাপথে রহনপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা স্টেশনসহ মোট ১৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টা ১৫ মিনিটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আম পরিবহনে ভাড়া লাগবে এক টাকা ৪৭ পয়সা, রাজশাহী থেকে এক টাকা ৪৩ পয়সা, পোড়াদহ থেকে এক টাকা ১৯ পয়সা, রাজবাড়ী থেকে এক টাকা সাত পয়সা, ফরিদপুর থেকে এক টাকা এক পয়সা এবং ভাঙ্গা থেকে ৯৮ পয়সা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহন করা হয়েছে। ট্রেন ভাড়া পেয়েছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা। ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে তিন হাজার ৯৯৫ টন আম পরিবহন করা হয়েছে। এ থেকে রেলের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা।
গত চার বছরে ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতে তেল খরচ হয়েছে ৯২ লাখ ৯১ হাজার টাকা। ফলে এ কয়েক বছরে ট্রেনের লোকসান হয়েছে ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৮৬০ টাকা।
তবে আম ব্যবসায়ী ও চাষিরা বলেন, ট্রেনে প্রতি কেজি আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় পাঠাতে খরচ হয় এক টাকা ৩২ পয়সা। ট্রেনে খুব কম খরচে আম পরিবহন করা গেলেও বারবার ওঠানামা করার কারণে ঝামেলা বেশি হওয়ায় সড়কপথ ও কুরিয়ারকে বেছে নেন ব্যবসায়ীরা।
রেলে আম পরিবহনে চাষি ও ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়ে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার দিন বলেছিলাম রেল লাভজনক হবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী চাষি ও ব্যবসায়ীদের কম খরচে আম পরিবহনের সুবিধা দিতে এই ট্রেন দিয়ে থাকেন।’ তিনি বলেন, ‘অসুস্থ মানুষের পাশে কেউ না থাকলে সে বাঁচে না। রেলওয়েও এখন অসুস্থ। চাষি ও ব্যবসায়ীরা আমাদের পাশে থাকেন। সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে আমরা চেষ্টা করে যাব।’