বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের একটা অংশ নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ১৪ দলের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মতো বাংলাদেশের একটা অংশ চট্টগ্রাম, মিয়ানমার নিয়ে খ্রিস্টান স্টেট (রাষ্ট্র) বানাবে।
বে অফ বেঙ্গলে (বঙ্গপোসাগরে) একটা ঘাঁটি করবে। তাঁর কারণ হচ্ছে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবসা বাণিজ্য চলে, আর এই জায়াগটাতে কোনো কন্ট্রোভার্সি নাই, কারও কোনো দ্বন্দ্ব নাই। বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগরের ভেতরেই একটি উপসাগর, এটা প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হচ্ছে। এই জায়গাটার ওপর অনেকের নজর।
এটা আমি হতে দিচ্ছি না, এটাও আমার একটা অপরাধ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও একটা দেশকে দেখানো হয়, কিন্তু আমিতো জানি তারা কোথায় কোথায় হামলা চালাবে, সেটা তো আমি জানি। সে কারণে আমাদের কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, পড়তে হবে জানি, কিন্তু আমি সেটা পাত্তা দেই না। দেশের মানুষ আমার শক্তি, মানুষ যদি ঠিক থাকে তাহলে আমরা আছি।
দেশটার যে উন্নতি হচ্ছে সেটাও অনেকের পছন্দ না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তা গেল ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও শুনতে হয় কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সরকার কারও গলা টিপে ধরেনি।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গতকাল প্রথম ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠকে শেখ হাসিনার কাছে নানা অসন্তোষের কথা জানান জোটের শরিকরা। ১৪ দলের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠ’কে এমনটা জানিয়েছেন।
একাধিক সূত্র জানায়, বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে জানতে চান জোটের প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা। তিনি ২০০৪ সালে ১৪ দলের ২৩ দফার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ২০০৮ সালের পর আর ২৩ দফা অঙ্গীকার রক্ষা করেনি আওয়ামী লীগ। আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকতে চাই কিন্তু আপনারা রাখবেন কিনা সেটা স্পষ্ট করে দেন।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি শহীদুল্লা শিকদারসহ একাধিক নেতা জোট নিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জানান। একাধিক নেতা অভিযোগ তোলেন, মোহাম্মদ নাসিম যখন ১৪ দলের মুখপাত্র ছিলেন তখন জোট অনেক বেশি সক্রিয় ছিল কিন্তু আমির হোসেন আমু সমন্বয়ক ও মুখপাত্র হওয়ার পর অতটা সক্রিয় নন। এছাড়া তৃণমূলে ১৪ দলকে কর্মকাণ্ড চালাতে নানা প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ তোলেন নেতারা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ দলের শরিকদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তৃণমূলে জোটের শরিকদের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এছাড়া ১৪ দলের নেতাদের মূল্যায়নেরও আশ্বাস দেওয়া হয়।
১৪ দলের শরিক একটি দলের কেন্দ্রীয় নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের দৃশ্যমান হতে বলেছেন। আমরা বলেছি কিভাবে দৃশ্যমান হব, হতে গেলে তো অনেক কিছু দরকার। আপনারা ওয়ার্ড সম্মেলনে কোটি টাকা খরচ করেন। আমরা জোটে থেকেও আপনাদের কাছে কোনো সহযোগিতা পাই না। আমরা কিভাবে এগোব? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা পথ তৈরি করেন আমরা সহযোগিতা করব।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন আরেকজন নেতা বলেন, আমরা কিছু আশ্বাস পেয়েছি। আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে বোঝা যাবে কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে।’