সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসছে নতুন সরকারি চাকরিজীবীরা

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সরকারি প্রতিষ্ঠানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করা হবে। যা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে চালু হবে।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ তথ্য জানান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৪তম বাজেট।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৮ বছর বয়সের বেশি বয়সের জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এ কার্যক্রমে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি বলেন, পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আমরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসব। স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ইতোমধ্যে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের জন্যও আমরা এ ব্যবস্থা চালু করব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সব অবসরভোগী সরকারি কর্মচারী ইএফটির মাধ্যমে মাসের শুরুতেই পেনশন পাচ্ছেন। পেনশনারদের জন্য পাইলট ভিত্তিতে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জীবিতাবস্থা যাচাইকরণ চালু করা হয়েছে। ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যে এ বাজেট বিদায়ি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বেশি। বিদায়ি অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ি অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা বিদায়ি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে দুই লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা বিদায়ি অর্থবছরে ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। বিদায়ি অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার একটি জবাবদিহিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, কল্যাণমুখী, উপাত্তনির্ভর, স্বয়ংক্রিয় এবং সমন্বিত দক্ষ স্মার্ট প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত ও মানসম্মত সেবা প্রদান এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। আমরা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে দক্ষ, উদ্যোগী, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর, দুর্নীতিমুক্ত, দেশপ্রেমিক, ও জনকল্যাণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। এ ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালুর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাবদ বছরে ব্যয় হবে ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা বেশি।

তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে জনসেবামূলক আচরণ ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের বস্তুনিষ্ঠ কর্মমূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

বাজেট পর্যালোচনায় বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাবদ এ বছর ১২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ ছাড়া কর্মচারীদের বেতন বাবদ ব্যয় হবে ২৯ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। এর বাইরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভাতা বাবদ ব্যয় হবে ৩৯ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসাব থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ ব্যয় বাবদ ৭৭ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা।

পেনশন
Comments (0)
Add Comment