বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ও জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধে অ্যাসাইকুডা সিস্টেমে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সংযুক্ত করার একটি উদ্যোগ চলমান রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। এ প্রক্রিয়ায় জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ করা গেলেও এখন পর্যন্ত তা পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ১৯ জুনের মধ্যে কাস্টম হাউজ থেকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের তালিকা সংযুক্তকরণ নিশ্চিত করা হয়েছে। ওই সময়ের পর সংযুক্তি নেই এমন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবেন না। ৪ জুন এনবিআরের কাস্টমস অটোমেশন শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
যেকোনো দেশ থেকে বৈধভাবে পণ্য আমদানি করতে এয়ারলাইনস বা শিপিং লাইন, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বার্থ অপারেটর ও কাস্টমসের মতো মাধ্যমগুলোর সহযোগিতা নিতে হয়। এ পণ্যের কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স নিশ্চিতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সেবার প্রয়োজন হয়। এনবিআরের দাবি, বন্ড সুবিধায় আমদানি করা পণ্যের চালান ছাড় করতে আমদানিকারকদের মাধ্যমে বেশকিছু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টকে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে সংযুক্ত করায় অনেক জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সব এজেন্টকে পূর্ণাঙ্গভাবে সংযুক্ত করার কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। এ অবস্থায় এটি সম্পন্নে নতুন করে সময়সীমা দিয়েছে এনবিআর।
বিভিন্ন সময় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের মিথ্যা ঘোষণা ও জাল-জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। ঢাকার সাভারের একটি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে পশ্চিমা একটি দেশ থেকে কিছু পণ্য আমদানি করে। ওই আমদানির চালানে আইটেম ছিল ৩০টি। যদিও ঘোষণায় দেখানো হয় মাত্র নয়টি পণ্য। ওই ঘটনায় চালানে মিথ্যা ঘোষণা দেয়া ছাড়াও ‘ইনডেন্ট ইনভয়েস ও প্যাকিং লিস্ট’ জাল করে কাস্টম হাউজে বিল অব এন্ট্রি দাখিলের অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট এক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে। এনবিআর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব এজেন্টকে পূর্ণাঙ্গভাবে সংযুক্ত করা গেলে এ ধরনের জাল-জালিয়াতির ঘটনা পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিরোধ করা যাবে।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে সংযুক্তকরণ প্রক্রিয়াটি আগের চেয়ে সহজ করা হয়েছে। বাংলাদেশ কাস্টমসের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সহজেই একজন আমদানিকারক তার আমদানি প্রক্রিয়ায় থাকা পণ্য চালানের জন্য এক বা একাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সংযুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন। কিন্তু এ কার্যক্রম এখনো আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছেনি। এ প্রক্রিয়া যথাযথভাবে শেষ না হলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের ঝুঁকি থেকে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমকে বিপন্ন করে তুলবে।
চিটাগং ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিঅ্যান্ডএফ) সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নির্ধারিত সময়সীমার বিষয়টি আমরা অবগত। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। নিবন্ধিত অনেকেই হয়েছেন। বাকি যারা হয়নি তাদের জন্য সময় বাড়ানো হতে পারে। সংযুক্তকরণ নিশ্চিতে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের অনীহার কোনো বিষয় নেই। কারণ অনলাইনে তালিকাভুক্ত করবেন পণ্য আমদানিকারক। এটা করতে গিয়ে আমদানিকারকদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে তারা বারবার বাধা পাচ্ছেন। এসব কাটিয়ে আমদানিকারক সংযুক্তকরণ সম্পন্ন করলেই মনোনীত হিসেবে সিঅ্যান্ডএফদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে।’
ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ৭-১০ হাজার সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে আছে সাড়ে তিন হাজার।