বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সব সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে সেগুলোর কোনটা ভাড়ায় চালিত আর কোনটা প্রাইভেট (ব্যক্তিগত) তা বুঝে উঠা যাত্রীদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। যে কারণে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে যাত্রীদের গলধঘর্ম হতে হয়।
এমনও দেখা যায়, একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সিএনজি অটোরিকশা দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রী কিছুদূর হেঁটে গিয়ে গাড়ির কাছে পৌঁছলে চালক বলছে, ‘আমার যাত্রী আছে’।
এছাড়া রাস্তায় বেশ কিছুদূর দৌড়ে সিএনজি ধরছেন এমন যাত্রীও দেখা যায় হরহামেশা। কিন্তু উন্নত যে সব দেশে ভাড়ায় গাড়ি বা ট্যাক্সি চলে সেখানে এ ঝামেলা পোহাতে হয় না। সে সব দেশে ট্যাক্সি ভাড়ার জন্য উন্মুক্ত থাকলে ‘ফর হায়ার’ এবং ভাড়ার পর ‘হায়ার্ড’ শব্দ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। এ কারণে সে সব দেশের যাত্রীরা বুঝতে পারেন কোন ট্যাক্সি খালি আর কোনটা ভাড়ায় চলছে।
ঐসব দেশের অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশেও একই ব্যবস্থা চালু করেছে পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ফর হায়ার এবং হায়ার্ড পদ্ধতি পুরোপুরি চালু করা গেলে যাত্রী এবং চালকদের ভোগান্তি কমবে। যাত্রীরা খুব তাড়াতাড়ি সিএনজি ধরতে পারলে যানগুলোর পার্কিং সময়ও কমে আসবে। এছাড়া সিএনজি অটোরিকশা চালকদের আয় বাড়বে।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর মিলিয়ে প্রায় ২৮ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এছাড়া অন্যান্য জেলা শহর ও উপজেলা পর্যায়েও প্রচুর সিএনজি অটোরিকশা রয়েছে। বছর বছর প্রতিটি অটোরিকশার ট্যাক্স-টোকেন হালনাগাদসহ ফিটনেস সনদ নিতে হয়। ফর হায়ার ও হায়ার্ড লেখাসংবলিত যন্ত্র না বসালে সনদ দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিআরটিএ সূত্র জানায়, সিএনজি অটোরিকশা খাতে শৃঙ্খলা আনয়ন করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় যে সব অটোরিকশা ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন চলাচল করে সেগুলো বন্ধ করতে গেলে এ ব্যবস্থার বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম সিএনজি শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারি সাখাওয়াত হোসেন দুলাল ইত্তেফাককে বলেন, ২০০৭ সালে সিএনজি খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি নীতিমালা হয়।
ঐ নীতিমালায় প্রতিটি সিএনজিতে ফর হায়ার এবং হায়ার্ড পদ্ধতি চালু করাসহ মিটার ব্যবস্থা চালু বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে। তবে মালিকরা নানা টালবাহানায় এ ব্যবস্থা চালু রাখেননি। তিনি জানান, বিআরটিএ অন্য নীতিমালায় প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশার দৈনন্দিন জমা ৯০০ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু কোনো মালিক ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার কমে জমা রাখে না। এছাড়া একেকটি সিএনজি শুধু এক জন চালকের হাতে থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ সিএনজির জন্য দুই জন চালক রয়েছে।
সাখাওয়াত হোসেন দুলাল আরো বলেন, ফর হায়ার এবং হায়ার্ড পদ্ধতি চালু হলে যাত্রী এবং চালকদের বিড়ম্বনা অনেকাংশে কমবে।