বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের ২৫ বছরের পুরোনো নথি জাতীয় আর্কাইভসে জমা দিতে হবে। না দিলে গুনতে হবে ২০ হাজার টাকা জরিমানা। মূল্যবান দলিল ও নথিপত্র ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য এমন বিধান রেখে ‘জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার আইন-২০২৪’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
২০২১ সালে প্রণয়ন করা জাতীয় আর্কাইভস আইনে গ্রন্থাগার অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এ কারণে নতুন আইন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সমন্বিত আইনের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. সালমা মমতাজ কালবেলাকে বলেন, আইনে নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়গুলো ২৫ বছর পর নথিগুলো আর্কাইভসকে হস্তান্তরের কথা থাকলেও তা করছে না। চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি বারবার মন্ত্রণালয়গুলোকে জানালেও তারা নিশ্চুপ থাকে। এ কারণে খসড়ায় সামান্য জরিমানার বিধান রাখার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খসড়ায় স্মার্ট সেবা প্রদান, তথ্য পুনরুদ্ধারে ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন, ই-রিসোর্স ও অনলাইন সেবাদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া আর্কাইভস ও জাতীয় গ্রন্থাগারে রক্ষিত তথ্য হ্যাক ও মুছে ফেলার চেষ্টা করলে কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
৩১ ধারার উপধারা ১-এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে জাতীয় আর্কাইভস ও জাতীয় গ্রন্থাগারে রক্ষিত কোনো রেকর্ড, নথিপত্র, গ্রন্থ, পত্রিকা, সাময়িকী, মানচিত্র, পাণ্ডুলিপি বা দলিলপত্র ইত্যাদি বিকৃত করেন, দাগান্বিত করেন, ছিঁড়ে ফেলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বা সার্ভারে রক্ষিত তথ্য মুছে ফেলেন বা হ্যাক করেন, তাহলে তিনি অনধিক তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আগে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল।
জাতীয় আর্কাইভস আইনে তথ্য হ্যাক করলে অর্থদণ্ড ও সাজার বিষয়টি থাকলেও সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩-এ তথ্য হ্যাকিংয়ে জরিমানার বিধানটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়েছে। এই আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহলে তিনি অনধিক ১৪ (চৌদ্দ) বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। প্রয়োজনে জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার এই আইনটিও ব্যবহার করতে পারে।
ড. সালমা মমতাজ বললেন, আমাদের প্রায় ৯ কোটি রিসোর্স রয়েছে। মূল্যবান নথি ও পুরোনো বই নষ্ট হওয়ার পথে। এসব ই-রিসোর্সের আওতায় সংরক্ষণ করা দরকার। এ ছাড়া যেগুলো অনুমতি সাপেক্ষে ডিজিটাল করা সম্ভব, সেগুলো ই-রিসোর্স করতে হবে। তবে আর্কাইভস আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
আগের ধারাগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছু নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যা গ্রন্থাগারের কাজকে সহজ করবে। ইতোমধ্যে আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার আইন-২০২৪-এর খসড়া মন্ত্রণালয়কে জমা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাজমা বেগম বলেন, প্রস্তাবিত জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার আইনের খসড়া মন্ত্রণালয়ে জমা হয়েছে। ২০২১ সালে প্রণয়ন করা আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে ‘জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার আইন-২০২৪’ করা হচ্ছে।