নিজস্ব প্রতিনিধি : পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা, সকলের জন্য মানবাধিকার উন্নীত করা এবং সমতা ও ন্যাবিচারের উপর ভিত্তি করে সংস্কার করা। তিনি বলেন, সরকারি বরাদ্দ বিতরণে কোনো প্রকার দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দের উপকরণসমূহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতসহ সঠিকভাবে সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেন।
আজ রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আগস্ট ২০২৪ মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা মঞ্জুরিকৃত অর্থ উত্তোলনের ক্ষমতা জেলা প্রশাসককে প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে বিগত ২০০২ থেকে ২০০৬ সালে জারিকৃত এ সংক্রান্ত সকল পরিপত্রের শর্তাদি যথাযথভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ প্রদান করেন।
সাবেক রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বিশেষ করে সামাজিক সুরক্ষা ও দারিদ্র্যবিমোচনে সরকারি বরাদ্দগুলো যথাযথ উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণের সময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপযুক্ত প্রতিনিধি দ্বারা যে কোন মুহূর্তে পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানসহ সার্বিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার নির্দেশের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি হতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য খাদ্য শস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ১৫০ জনের প্রতি জনকে ৪০ কেজি হিসেবে ৬ মে. টন চাল, হতদরিদ্র ২০০ জন-এর মধ্যে প্রতি জনকে ২০ কেজি হিসেবে ৪ মে.টন চাল, খাগড়াছড়ি শহরে রাস্তার পাশে দরিদ্র অস্থায়ী দোকানদার এবং হতদরিদ্র ৫০০ জন মানুষের মধ্যে জন প্রতি ২০ কেজি হিসেবে ১০ মে.টন চাল এবং রাঙ্গামাটি শহরে রাস্তার পাশে দরিদ্র অস্থায়ী দোকানদার এবং হতদরিদ্র ৫০০ জনের প্রতি জনকে ২০ কেজি হিসেবে ১০ মে.টন চাল মোট ৩০ মে.টন চাল জেলা প্রশাসক খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি বরাবর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়া খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দিঘীনালা উপজেলায় সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য ১৫০ জনের মধ্যে জন প্রতি ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল, জন প্রতি ৫ কেজি মসুর ডাল বাবদ ২ লাখ ২০ হাজার ৫ শত টাকা বরাদ্দের মঞ্জুরী প্রদান করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মালেকা পারভীন স্বাক্ষরিত পত্রে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য (চাল) পার্বত্য এলাকার সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য বিতরণের পরবর্তী অগ্রগতি প্রতিবেদন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের নির্দেশনা রয়েছে। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য ব্যবহারে বিশেষ প্রকল্প কর্মসূচি বাস্তবায়ন সংক্রান্ত এই মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখ জারিকৃত নীতিমালার প্রতিটি শর্ত যথাযথভাবে অনুসরণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের হিসাব নিরীক্ষার জন্য যথোপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং খাদ্যশস্য ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন যথাসময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে এবং বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য স্থানীয় গুদাম হতে যথাসময়ে উত্তোলন করতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও তিন পার্বত্য জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।