বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্রাইম ভিক্টিম (অপরাধের শিকার) হওয়া ভুক্তভোগীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করছে ডিএমপি। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অপরাধের শিকার হয়ে প্রাণ হারালে পরিবরটি অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের স্বাভাবিক জীবনধারণের আর কোনো উপায় থাকে না। এজন্য ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের জরিমানা থেকে আদায় হওয়া টাকার অন্তত ৩০ শতাংশ অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ভিক্টিম পরিবারের জন্য বরাদ্দ করার পরিকল্পনা রয়েছে। রোববার বিকালে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে এই শুভেচ্ছা মতবিনিময় হয়। সভায় ক্র্যাবের পক্ষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখেন। এ সময় ক্র্যাবের যেকোনো শুভ ও কল্যাণকর কাজে ডিএমপি সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ডিএমপির কোনো সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত অন্যায় আচরণ করলে রেহাই দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
কমিশনার বলেন, আমার পরিকল্পনা ছিল এবারের পুলিশ সপ্তাহে আমি এ বিষয়টি তুলে ধরব; কিন্তু পুলিশ সপ্তাহ না হওয়ায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের পরিকল্পনা তুলে ধরে অর্থ বরাদ্দ চাইব। তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকে ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ১০০ জনকে শনাক্ত ও অন্তত ৩০ জনকে মাদক গ্রহণজনিত কারণে বরখাস্ত করেছি। আমি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নিয়মিত পুলিশ লাইনে যাই। সেখানে কিছু পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে পারি। পুলিশের কল্যাণ সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাদকের কুফল তুলে ধরে বক্তব্য দেই এবং মাদক পরিহারের আহ্বান জানাই।
কমিশনার বলেন, প্রথমে আমার ৫৭টি বিভাগের উপকমিশনারদের সম্পৃক্ত করে তাদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেওয়াসহ মাদক সম্পৃক্তদের ফিরে আসার আহ্বান জানাই। কিন্তু এতে কেউ সাড়া না দিলে পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের ডোপ টেস্ট করাতে বলি। এতে কয়েকজন এসআইসহ শতাধিক পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। ডোপ টেস্ট কার্যক্রম আরও জোরদার করাসহ আগামীতেও চলমান থাকবে। তবে ডিএমপিতে ঢালাওভাবে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে না। কমিশনার বলেন, থানায় আর্থিক লেনদেনের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক করছি। ৯৫ শতাংশ বাদী জানিয়েছেন, থানায় মামলা বা জিডি করতে কোনো ধরনের হয়রানি বা টাকা-পয়সা দিতে হয়নি।
ডিএমপি ৩৪ হাজার পুলিশের বিশাল বাহিনী। তাদের সবাই যে সৎ আমি সেটা বলব না। আমি বলব, আমাদের উপকমিশনারদের কেউই আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা থানায় বা ডিএমপির কোনো সদস্যের অনৈতিক লেনদেনের যেকোনো তথ্য পাওয়ামাত্রই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যত বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিই তদবির করুক না কেন, ডিএমপির কোনো সদস্য অন্যায় করলে ছাড় দেওয়া হবে না ।অন্যদের মধ্যে ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক হাসান-উজ-জামান, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক সাজ্জাদ মাহমুদ খান, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম সাত্তার রনি ও মিন্টু হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।