গাল্ফফুড প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, রপ্তানিতে অবদানের অপার সম্ভাবনা

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রতিবছরের মতো এবারও গাল্ফফুড এক্সিভিশনে অংশ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। দুবাইয়ের ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টার ২৫ টি বুথ নিয়ে ৪০টি খাদ্য রপ্তানি কোম্পানি অংশ নিয়ে এই মেলা। দেশীয় পণ্য আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে বিদেশীদের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে সেই সঙ্গে রপ্তানিতে অবদানের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

দুবাই কনস্যুলেটের সহযোগীতায় দুবাই ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টার আল জাবিল হলে বসেছে বাংলাদেশী খাদ্য রপ্তানি কারকের স্টল গুলো। মেলা চলছে ২০ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের মেলায় ৪০ টি কোম্পানীর সুসজ্জিত প্যাভিলিয়নে চমৎকার ভাবে সাজানো হয়। বাংলাদেশের স্বনামধন্য খাদ্য রপ্তানিমূলক প্রতিষ্ঠান সমূহ অংশ গ্রহণ করেছে। দৃষ্টিনন্দন স্টলগুলো অনেকের নজর কেড়েছে।

দেশের এইসব প্রতিষ্ঠান বর্তমানে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার প্রায় ১২০টির বেশি দেশে বাংলাদেশ থেকে খাদ্য রপ্তানি করে। বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৪১ সাল নাগাদ ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খাদ্য পণ্য রপ্তনীর লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রক্সিয়া জাতক খাদ্য রপ্তনীর প্রবৃদ্ধির হার ২৬% বলে জানা যায়। করোনা কালীন সময়ে এই দেশের আইন কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে প্রদর্শনীতে পৃথিবীর প্রায় ৮৫ টি দেশের ক্রেতার সমাগম ঘটে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন কোম্পানি বা রপ্তানীকারক যেমন এসেছেন। এসেছেন বায়ার বা ক্রেতারাও।

বাংলাদেশী পণ্যসামগ্রী বিপনন এই মেলায় গুরুত্ব অপরিসীম। নতুন নতুন ক্রেতা যেমন মিলছে তেমনই পাওয়া যাচ্ছে ক্রেতার চাহিদা অনুসারে নতুন প্রডাক্ট এর অর্ডারও। বিস্তৃতি লাভ করেছে বাংলাদেশী খাদ্য পর্ণের বাজার। এই এক্সিভিশনে যেনমিভাবে ব্যবসার প্রসার ঘটে তেমনিভাবে দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার অনন্য ফ্লাটফরমও বটে।

এই নিয়ে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরণের পর্ণের সম্ভার এখানে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের রপ্তানিতে একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। যে পোডাক্টগুলো মেলায় ডিসপ্লে করা হয়েছে অধিকাংশ কিন্ত আইডেন্টিক্যাল পোডাক্ট। একই ধরণের পোডাক্ট বিভিন্ন কোম্পানি নিয়ে এসেছে। এবং এটি বৈশ্বিক চাহিদা সৃষ্টি হওয়াতে কিন্তু এটা হয়েছে। এটি বৈশ্বিক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে তার মুখ্য যারা কনজিউমার তারা হলো অধিকাংশ বাংলাদেশী একই কমিউনিটির ভিন্ন ভিন্ন দেশের। ১৪০ টির মতো দেশ অাছে যারা ছড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী পর্ণের বহিবিশ্বে কৃষিজাত পর্ণের বাজারজাত ক্ষেত্রে একটি বড় সোর্স। সেক্ষেত্রে আমরা যদি এটি ভালো ভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলে সারা পৃথিবীতে আমাদের পর্ণ একটি বিরাট বাজার সৃষ্টি হবে।

দুবাই নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সেলর কামরুল হাসান বলেছেন, গাল্ফফুড এই জিসিসি অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বড় একটি মেলা।প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও বাংলাদেশের মোট ৪০টি কোম্পানি এই গাল্ফফুড মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।প্রতিবছর যে ধরণের জাঁকজমক ভাবে এই গাল্ফফুড মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কোভিট ১৯ কারণে মেলায় ভিড় কম থাকলেও এই বছর জেনুইন কাস্টমাররা বেশি এসেছে।ফলে আমাদের যারা এখানে এক্সিভিউটর তারা অত্যন্ত খুশি। তিনি বলেন, আগামী বছর ২০২০ উপলক্ষে আরো জাঁকজমক পূর্ণভাবে আয়োজিত হবে।আমরা চেস্টা করবো গাল্ফফুডকে আরো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা যায়। সেজন্য ইপিবির এবং বাপা সহায়তা করলে তাদের সাথে আমরা একটি চমৎকার অনুষ্টান করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, আগামী বছর গাল্ফফুড ফেয়ারে ২টি হলে বড় পরিসরে আমরা গাল্ফফুড মেলা করবো।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ডেপুটি সেক্রেটারি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, গাল্ফফুড মেলায় মুলত বাংলাদেশ থেকে যে ব্যবসায়ীরা এসেছেন প্রস্তুতকৃত খাদ্য দ্রব্য নিয়ে অর্থাৎ প্রসেস ফুড নিয়ে। তাদের তদারকির জন্য এবং এই মেলাটি যাতে সুশৃঙ্খলভাবে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিচালিত হয় এবং আমাদের ব্যবসায়ীরা যারা এই মেলায় এসেছেন তাদের কোন সমস্যা আছে কিনা সেটা নিয়ে আমরা এই বিষয়গুলো দেখভাল করতেছি। ভবিষ্যতেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরণের সহযোগীতা করে যাবে।, রপ্তনী উন্নয়ন ব্যুরো পরিচালক মাহামুদুল ইসলাম বলেছেন, গাল্ফফুড ২০২১ মুলত এটি মেলা। প্রতিবছরই আমরা করে থাকি। এটি বাংলাদেশের প্রসেস ফুডের জন্য একটি বৃহৎ সুযোগ। এই সুযোগ আমরা স্থানীয় এবং আরব অঞ্চলের বাজারে আমরা এক্সপোর্ট করি। আমাদের ব্যবসায়ীরা প্রতিবছরই এই মেলায় অংশ গ্রহণ করে। এটি একটি সফল মেলা হিসাবে আমরা যোগ দিয়ে থাকি। এবছর কোভিট এর কারণে কিছুটা ব্যর্থ ঘটেছে। ভবিষ্যতে যে আরো ফলপ্রসূ হবে। আমরা আরো ব্যাপক পরিসরে এই গাল্ফফুডে অংশগ্রহণ করতে পারবো।

প্রাণ কোম্পানি ইউএইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাসান বলেছেন, এবারের গাল্ফফুড মেলা অনেকটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই কঠিন সময়ের মধ্যে হলেও যারা গাল্ফফুডে ভিজিকরা যারা এসেছেন এরা জেনুইন ভিজিটর। তাদের প্রয়োজনের জন্যই এই কষ্টের মধ্যে আসছে। আমরা অনেক ভালো রেসপন্স পাচ্ছি। এবং এই বারে অনেক কোয়ালিটি ভিজিটর পাচ্ছি। আশাকরি আমরা এবার একটা ধাপে উন্নীত হতে পারবো।

গাল্ফফুড প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ
Comments (0)
Add Comment