বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে সমগ্র বাংলাদেশের এমপিওভুক্ত মাদরাসার মধ্যে ইতোমধ্যে ৪২২০টিতে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে।
গতকাল বিকেল ৩টায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কে, এম, রুহুল আমীন অনলাইনে বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী ৬৯টি মাদরাসায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নার একযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত সকল মাদরাসার সভাপতি, প্রিন্সিপাল/সুপারগণের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে বলেই এমন ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে সকলকে একত্রিত করা সম্ভব হয়েছে বিধায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আইসিটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়কে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই যেসব মাদরাসায় বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপিত হয়েছে তা যেন সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয়। বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনের যে উদ্দেশ্য তথা সেখানে বঙ্গবন্ধুর আত্মজিবনী সম্বলিত বই, কারাবাসের সময়কাল এছাড়াও শিক্ষার্থীরা যাতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পায় এমন সকল বই, ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন দ্বারা সুসজ্জিত রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৩ সালে ৩১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা আলীয়ার মাঠে সমবেত তৎকালীন মাদরাসা শিক্ষক ও ইমলামি শিক্ষা সংস্কার কমিটির সম্মেলনে বলেছিলেন, মসজিদ মক্তব হলো শিক্ষার মূল বিষয় ইতিহাস একথা বলে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যথেষ্ট মাদরাসা দরদী ও মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে অগ্রণী ভ‚মিকা রেখে আসছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৮শ’ মাদরাসায় ছয়তলা ভবন প্রকল্প, সম্প্রতি ৫০৪টি মাদরাসা নতুন এমপিওভুক্তি, বৈশাখী ভাতাসহ সকল বোনাস, স্কুল কলেজের মত প্রায় সকল সুযোগ সুবিধাই দিয়ে আসছেন। এখন আর বেতনের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিতে মাসের শুরুর দিকেই আপনারা নিজনিজ বেতন ভাতা পেয়ে আসছেন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এখনও টুকিটাকি যেসব সমস্যা রয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতায় তা অচিরেই সমাধান হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য এত কিছু করলেন ফলশ্রুতিতে তিনি আপনাদের কাছে শুধুমাত্র একটি জিনিস চেয়েছেন, তা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস ঐতিহ্য ও স্মৃতিকে ধরে রেখে আগামী প্রজন্মকে শিক্ষা দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-কর্মচারীসহ জনগণ বঙ্গবন্ধু কর্নার রাখা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ ও বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্য, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বিষয়ক বিভিন্ন বই, পুস্তক, প্রামাণ্য-চিত্র পড়ে ও দেখার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উন্নয়ন সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা অর্জন করতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা যাতে ঐসব ইতিহাস ঐতিহ্য হৃদয়ে লালন করে আগামীতে সঠিক নেতৃত্ব দিতে পারে সে উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন। স্থাপিত এ বঙ্গবন্ধু কর্নার যেন সুরক্ষিত থাকে ও পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন তথ্য যুক্ত করা হয় সেজন্য তিনি সকলকে অনুরোধ জানান।
বক্তব্য শেষে মহাপরিচালক কে, এম, রুহুল আমীন তালিকাভুক্ত ৬৯টি মাদরাসায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নার আলাদা আলাদাভাবে প্রদর্শনপূর্বক সকলের সাথে সালাম বিনিময় করেন এবং দ্রুততম সময়ে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল মাদরাসার বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করা হবে মর্মে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অবহিত করেন।
সভাশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার পরিজনের মধ্যে যারা শাহাদাৎ বরণ করেছেন তাঁদের রূহের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুসাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করা হয়। বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধনের সময় অনলাইনে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং মাদরাসার সভাপতি, প্রিন্সিপাল/সুপার, শিক্ষকমন্ডলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সংশ্লিষ্ট মাদরাসায় উপস্থিত ছিলেন।